পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রান্তে । ১১ রুমানিয়ান জাহাজে যা খাদ্য ছিল তা পথ্য ছিল না, দ্বিতীয়ত সোয়ারেসের বাড়িতে যে ভোজের ব্যবস্থা ছিল সেটাও । ছিল অভ্যাস-বিরুদ্ধ এবং গুরুপাক । এমন অবস্থায় ক্লাস্তি ও ব্যাধি নিয়ে যখন বক্তৃতামঞ্চে উঠে দাড়ালুম তখন আমার মন কোনোমতে কথা কইতে চাচ্ছিল না। পালে হাওয়া ছিল না, কেবলি লগি মারতে হোলো। স্পষ্টই বুঝতে পারছিলুম পাড়ি জমছে না। যা হোক কোনোমতে ঘাটে পৌছনো গেল । সেটা কেবল আবৃত্তির জোরে । সুইডেনের সেই মিনিস্টর ছিলেন, বক্ততা তার ভালো লেগেছিল বললেন । যে-মেয়ের পাত্র জোটা সহজ নয় যখন দেখি তারো বেশ ভালো বিয়ে হয়ে গেল তখন যে-রকম মনে হয় এর মুখে প্রশংসা শুনে আমার সেই রকম মনের ভাব হোলো। ইনি যদি যুরোপের উত্তর দেশের লোক না হতেন তাহলে মনে করতে পারতেম কথাটা অকৃত্রিম নয়। পরদিন মুজিয়ম দেখতে গিয়েছিলেম —দেখবার জায়গা বটে, তার বর্ণনা করতে গেলে অনেক কথা বলতে হবে। ফেরবার পথে তোমরা নিজেরাই দেখে যাবে— তোমাদের সেই স্বচক্ষের উপরেই বরাত দিয়েই চুপ করা গেল। এই সব কীর্তি দেখে মনে মনে ভাবি যে, বাইরের মানুষ সাড়ে তিন হাত কিন্তু ভিতরে সে কত প্রকাও ৷ এখানকার রাজার সঙ্গেও দেখা হোলো। তাকে বললেম যুরোপের অনেক রাজ্য থেকে বিশ্বভারতী অনেক গ্রন্থ উপহার পেয়েছেন ; আরবি সাহিত্য সম্বন্ধে যুরোপে যে সব ভালো বই বেরিয়েছে যদি তদীয় মহিমা তা আমাদের দিতে পারেন