পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S আমরা ছিলুম অস্তসূর্যের শেষ আলোয়, তোমরা ছিলে ঘাটের ছায়ায় দাড়িয়ে । ক্রমে অস্পষ্ট হয়ে এল, ক্রমে আড়াল পড়ল, বস্তুর আড়াল। ফিরলুম সেই ক্যাবিনে— মনে পড়ে ক্যাবিনটা ? মনে রাখবার মতো কিছুই না, হুদিনের বাসা । যেখানে আমরা পাকা ক’রে বাসা বাধি সেখানে বাসার সঙ্গে মানুষের সম্বন্ধস্মৃতি জড়িয়ে যায় –কিন্তু পথে চলতে চলতে পান্থশালার সঙ্গে কোনো গ্রন্থি বাধে না— স্রোতের শৈবাল যেমন নদীর বঁাকে বাকে ক্ষণকালের জন্যে ঠেকতে ঠেকতে যায় তেমনি আর কি। তবু পথিক-জীবনের পথচলা প্রবাহের মধ্যেও অনেক কথা মনের মধ্যে জড়িয়ে থাকে। প্রতিদিন তুমি নিজের হাতে সেবাযত্ন করেছিলে— কখন আমি কী পরি কখন আমার কৗ চাই সমস্ত তুমি জেনে নিয়েছিলে, তারপরে পথে পথে সমস্ত জিনিসপত্র তোমার হাতে বাধা আর খোলা । এ সবগুলো অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল—সেই অভ্যেসটা এক দিনের মধ্যেই হঠাৎ আপন ছয়মাসব্যাপী প্রতিদিনের দাবি থেকে বঞ্চিত হয়ে বিমর্ষ যুর পড়ে ।