পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ) o b- পত্রধারা 8 5 আমার জীবনে নিরস্তর ভিতরে ভিতরে একটি সাধনা ধরে রাখতে হয়েছে । সে-সাধন হচ্ছে আবরণ মোচনের সাধনা, নিজেকে দূরে রাখবার সাধনা। আমাকে আমি থেকে ছাড়িয়ে নেবার সাধনা । স্থির হয়ে বসে এ-কথা প্রায়ই আমাকে উপলব্ধি করতে চেষ্টা করতে হয়, যে, যে-অামি প্রতিদিনের সুখ দুঃখে কমে চিন্তায় বিজড়িত, সে ঐ সংখ্যাহীন অনাত্মের নিরুদ্দেশ স্রোতে ভেসে যাওয়ার সামিল । তাকে দ্রষ্টারূপে স্বতন্ত্রভাবে দেখতে পারলেই ঠিক দেখা হয়—তার সঙ্গে নিজেকে অবিচ্ছিন্ন এক ক’রে জানাই মিথ্যা জানা । অামার পক্ষে এই উপলব্ধির অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন আছে ব’লেই আমি একে এত ক'রে ইচ্ছা করি । আমার মনের বাসা চৌমাথায়, আমার সব দরজাই খোলা, সব রকমের হাওয়া এসেই পৌঁছয়, সব জাতেরই আগন্তুক একেবারে অন্দরে ঢুকে পড়ে । মানুষের জীবনে অন্দর ব’লে একটা জায়গা আছে, সেইটে তার বেদনার জায়গা, সেইখানে তার অনুভূতি । এইজন্যেই এর মধ্যে কেবল অন্তরঙ্গের প্রবেশ । তাদেরই নিয়ে সুখদুঃখের লীলাই সংসারের লীলা। ঐ সীমার মুধ্যে সবই সহ্য করতে হয় । কিন্তু আমার জীবনদেবতা আমাকে কবি করবেন স্থির করেছেন ব’লেই আমার অন্দরমহলকে অরক্ষিত রেখেছেন, আমার খিড়কির দরজা নেই, চারিদিকেই