পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রাস্তুে ১২১ 8b" তোমাকে চিঠি লিখছি কোপেনহেগেন থেকে, পড়েছি ঘূর্ণির মধ্যে। কোথাও একদণ্ড থামতে দিলে না। অপরিচিতের পরিচয় কুড়োতে কুড়োতে চলেছি কিন্তু সে পরিচয় সঞ্চয় ক’রে রাখবার মতো সময় নেই । তা ছাড়া অামার ভোলা মন, আমার স্মরণের ভাণ্ডারে তালা চাবি নেই—একটা কিছু যেই মজুদ হয়েছে অমনি আর একটা কিছু এসে তাকে সরিয়ে ফেলে। কিছু তলিয়ে যায়, কিছু দুমড়ে যায় ; অস্পষ্ট হয়ে ওঠে । এটাকে সম্পূর্ণ লোকসান ব’লে আক্ষেপ করব না, বর্জন করতে না পারলে অজন করা যায় না, জমাতে গেলে জমিয়ে বসতে হয়, নড়াচড়া বন্ধ । আমার মনোরথটাকে বহু কাল ধরে কেবলি চালিয়ে এসেছি, এক রাস্তা থেকে আর এক রাস্তায়—গরাজে বন্ধ করে রাখবার সময়ই জুটল না। সঞ্চয়শালার দ্বারের সামনে গদিয়ান হয়ে বসতে যদি পারতুম তাহলে নামের বদলে বস্তু পাওয়া যেত বিস্তর। সামান্ত কথাটা ভেবে দেখো না, মনে রাখবার মতো বুদ্ধি যদি থাকত তাহলে অন্তত পরীক্ষা পাসের পালা শেষ পর্যন্ত চুকিয়ে সংসারটাকে সেলাম ঠুকে এবং সেলাম কুড়িয়ে বুক ফুলিয়ে চলে যেতে পারতুম। একটা কিছু বলতে যদি চাই তার রেফারেন্স দিতে পারিনে, পণ্ডিত সভায় বোকার ।