পাতা:গল্পসল্প - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পসল্প

 দেখো দিদি, একটা জীব জন্মায় যার কাঠামোটা হঠাৎ যায় বেঁকে। সে হয় মিউজিয়মের মাল। ঐ হ. চ. হ. আমার মিউজিয়মে দিয়েছেন ধরা।

 ওঁকে পেয়ে তুমি খুব খুশি হয়েছিলে?

 তা হয়েছিলুম। কেননা তখন তোমার ইরুমাসি গিয়েছেন চলে শ্বশুরবাড়ি। আমাকে অবাক ক’রে দেবার লোকের অভাব ঘটেছিল। ঠিক সেই সময় এসেছিলেন হরীশচন্দ্র হালদার এক-মাথা টাক নিয়ে। তার তাক লাগিয়ে দেবার রকমটা ছিল আলাদা, তোমার ইরুমাসির উলটো। সেদিন তোমার ইরুমাসি শুরু করেছিল জটাইবুড়ির কথা। ঐ জটাইবুড়ির সঙ্গে অমাবস্যার রাত্রে আলাপ পরিচয় হত। সে বুড়িটার কাজ ছিল চাঁদে বসে চরকা কাটা। সে চরকা বেশিদিন আর চলল না। ঠিক এমন সময় পালা জমাতে এলেন প্রোফেসার হরীশ হালদার। নামের গোড়ার পদবীটা তাঁর নিজের হাতেই লাগানো। তাঁর ছিল ম্যাজিক-দেখানে-হাত। একদিন বাদলা দিনের সন্ধেবেলায় চায়ের সঙ্গে চিঁড়ে-ভাজা খাওয়ার পর তিনি বলে বসলেন, এমন ম্যাজিক আছে যাতে সামনের ঐ দেয়ালগুলো হয়ে যাবে ফাঁকা।

 পঞ্চাননদাদা টাকে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন, এ বিদ্যে ছিল বটে ঋষিদের জানা।

 শুনে প্রোফেসার রেগে টেবিল চাপড়ে বললেন, আরে রেখে দিন আপনার মুনি-ঋষি, দৈত্য-দানা, ভূত-প্রেত।

 পঞ্চাননদাদা বললেন, আপনি তবে কী মানেন।

 হরীশ একটিমাত্র ছোটো কথায় বলে দিলেন, দ্রব্যগুণ।

 আমরা ব্যস্ত হয়ে বললুম, সে জিনিসটা কী।

৫০