পাওয়া ভার। আমাদের সভ্যতা কেবল যে ধ্রুব, তাহা নহে, ইহার মধ্যে একটা ধর্ম্মনীতির শৃঙ্খলা আছে; কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেবল একটা অর্থনৈতিক উচ্ছৃঙ্খলতা দেখিতে পাই। তোমাদের ধর্ম্ম আমদের ধর্ম্মের চেয়ে ভাল কি না, এ জায়গায় আমি সে তর্ক তুলিতে চাই না—কিন্তু এটা নিশ্চয়, তোমাদের সমাজের উপর তোমাদের ধর্ম্মের কোন প্রভাব নাই। তোমরা খৃষ্টানধর্ম্ম স্বীকার কর, কিন্তু তোমাদের সভ্যতা কোনকালেই খৃষ্টান হয় নাই। অপর পক্ষে আমাদের সভ্যতা একেবারে অন্তরে অন্তরে কন্ফ্যুশীয়ান্। কন্ফ্যুশিয়ান্ বলাও যা, আর ধর্ম্মনৈতিক বলাও তা। অর্থাৎ ধর্ম্মবন্ধনগুলিকেই ইহা প্রধানভাবে গণ্য করে। অপরপক্ষে অর্থনৈতিক বন্ধনকেই তোমরা প্রথম স্থান দাও, তাহার পরে, যতটা পার, তাহার সঙ্গে ধর্ম্মনীতি বাহির হইতে জুড়িয়া দিতে চেষ্টা কর।
তোমাদের পরিবার এবং আমাদের পরিবারের তুলনা করিলেই আমার কথাটা স্পষ্ট হইবে। সন্তান যতদিন পর্য্যন্ত না বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া নিজের ভার লইতে পারে, তোমাদের পরিবার ততদিন পর্য্যন্ত তাহাকে আহার দিবার ও রক্ষা করিবার একটা উপায়স্বরূপমাত্র। যত সকালসকাল পার, ছেলেগুলিকে পাব্লিক্স্কুলে পাঠাইয়া দাও, সেখানে তাহারা যত শীঘ্র পারে, গৃহের প্রভাব হইতে নিজেদের মুক্তিদান করিয়া বসে। যেমনি তাহারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়, অমনি তাহাদিগকে রোজগার করিতে ছাড়িয়া দাও—এবং তাহার পরে অধিকাংশস্থলেই বাপ-মার প্রতি নির্ভর যখনই ফুরাইল, বাপ-মার প্রতি কর্তব্যস্বীকারও অমনি শেষ হইল। তাহার পরে ছেলেরা যেখানে খুসি যাক্, যাহা খুসি করুক্, যত খুসি পাক্ এবং যেমন খুসি ছড়াক্, তাহাতে কাহারো কথা কহিবার নাই;—পরিবারবন্ধন রক্ষা করিবে কি না করিবে, তাহা সম্পূর্ণ তাহাদের ইচ্ছা। তোমাদের সমাজে এক একটি ব্যক্তি একজন এবং সেই এক-