পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9२ রবীন্দ্র-রচনাবলী নাম তার স্বর্গভূমি, আমারে সেথায় তুমি ল’য়ে চল, দেখি গিয়া পিতায় মাতায় ! ল’য়ে চল দেব তুমি আমারে সেথায় । যাইব মায়ের কোলে, জননীয়ে মাতা ব’লে আবার সেখানে গিয়া ডাকিব তাহারে । দাড়ায়ে পিতার কাছে জল দিব গাছে গাছে, সঁপিব তাহার হাতে গাথি 'ফুলহারে । হাতে ল’য়ে শুকপাখী বাবা মোর নাম ডাকি ‘কমলা’ বলিতে আহা শিখাবেন তারে । লয়ে চল, দেব, তুমি সেথায় আমারে ! জননীর মৃত্যু হ’লে, ওই হোথা গাছতলে রাখিয়াছিলেন তারে জনক তখন ! ধবলতুষার ভার ঢাকিয়াছে দেহ তার, স্বরগের কুটরেতে আছেন এখন ! আমিও তাহার কাছে করিব গমন ।” বালিকা থামিল সিক্ত হয়ে আঁখিজলে পথিকেরো অঁাথিস্বয় হ’ল আহা আশ্রময়, মুছিয়া পথিক তবে ধীরে ধীরে বলে, “আইস আমার সাথে, স্বৰ্গরাজ্য পাবে হাতে, দেখিতে পাইবে তথা পিতায় মাতায় । নিশা হ’ল অবসান, পাখীরা করিছে গান, ধীরে ধীরে বহিতেছে প্রভাতের বায় ! আঁধার ঘোমটা তুলি প্রকৃতি নয়ন খুলি চারি দিক ধীরে যেন করিছে বীক্ষণ— আলোকে মিশিল তারা, শিশিরের মুক্তাধার। গাছ পালা পুষ্প লতা করিছে বর্ষণ ! হোথা বরফের রাশি, মৃত দেহ রেখে আসি হিমানীক্ষেত্রের মাঝে করায়ে শয়ান, এই লয়ে যাই চলে, মুছে ফেল অশ্রজলে— অশ্রবারিধারে আহা পুরেছে নয়ান!”