পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা [ s१ ‘একেবারে শ্রেষ্ঠ লেখাগুলিকে নিয়েই আঁটি করে তোড়া বাধতে হবে এ কথা আমি বলি নে । একটা আদর্শ আছে সেটা নিছক পয়লা শ্রেণীর আদর্শ নয়, সেটা সাধারণ চলতি শ্রেণীর অাদর্শ। তার মধ্যে পরস্পরের মূল্যের কমিবেশি আছে। রেলগাড়িতে যেমন প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় শ্রেণীর কামরা । তাদের রূপের ও ব্যবহারের অাদর্শ ঠিক এক নয়, কিন্তু চাকায় চাকায় মিল আছে। একটা সাধারণ সমাপ্তির আদর্শ তারা সকলেই রক্ষা করেছে। যারা অসম্পূর্ণ, কারখানা-ঘরের বাইরে তাদের আনা উচিত হয় না । কিন্তু তারা যে অনেক এসে পড়েছে তা এই বইয়ের গোড়ার দিকের কবিতাগুলি দেখলে ধরা পড়বে। কুয়াশা যেমন বৃষ্টি নয়, এরাও তেমনি কবিতা নয় । যারা পড়বেন তারা এই-সব কাচা বয়সের অকালজাত অঙ্গহীনতার নমুনা দেখে যদি হাসতে হয় তো হাসবেন তবু একটুখানি দয়া রাখবেন মনে এই ভেবে যে, ভাগ্যক্রমে এই আরম্ভই শেষ নয় । এই প্রসঙ্গে একটা কথা জানিয়ে রাখি, এই বইয়ে যে গীতিনাট্য ছাপানো হয়েছে তার গানগুলিকে কেউ যেন কবিতা বলে সন্দেহ না করেন । ‘সাহিত্যরচনার মধ্যে জীবধর্ম আছে । নানা কারণে তারা সবাই একই পূর্ণতায় দেখা দেয় না। তাদের সবাইকে একত্রে এলোমেলো বাড়তে দিলে সবারই ক্ষতি হয় । মনে আছে এক সময়ে বিজয়া পত্রে বিপিনচন্দ্র পাল আমার রচিত গানের সমালোচনা করেছিলেন। সে সমালোচনা অমুকুল হয় নি। তিনি আমার যে-সব গানকে তলব দিয়ে বিচারকক্ষে দাড় করিয়েছিলেন তাদের মধ্যে বিস্তর ছেলেমামুষি ছিল । তাদের সাক্ষ্য সংশয় এনেছিল সমস্ত রচনার পরে । তারা সেই পরিণতি পায় নি যার জোরে গীতসাহিত্যসভায় তারা আপনাদের লজ্জা নিবারণ করতে পারে । ইতিহাসের রসদ জোগাবার কাজে ছাপাখানার আড়কাঠির হাতে সাহিত্যমহলে তাদের চালান দেওয়া হয়েছে। তাদের সরিয়ে আনতে গেলে ইতিহাস আপন পুরাতন দাবির দোহাই পেড়ে আপত্তি পেশ করে । ‘আজ যদি আমার সমস্ত রচনার সমগ্র পরিচয় দেবার সময় উপস্থিত হয়ে থাকে তবে তাদের মধ্যে ভালো মন্দ মাঝারি আপন আপন স্থান পাবে এ ख५ S२