পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী গাছপালা নাই কোথা প্রাস্তর গভীর। শাখাপত্ৰহীন বৃক্ষ, শুষ্ক, মঞ্চ, উচু করি শির দাড়াইয়া দূরে— দূরে নিরথিয়া চারি দিক-পান পৃথিবীর ধ্বংসরাশি, রহিয়াছে হোয়ে ম্ৰিয়মাণ ? শ্মশানের নাই প্রাণ যেন আপনার, শুষ্ক তৃণরাজি তার ঢাকিয়াছে বিশাল বিস্তার ! তৃণের শিশির চুমি বহে নাকে প্রভাতের বায় কুস্কমের পরিমল ছড়াইয়া হেথায় হোথায় । শ্মশানে সাধার ঘোর ঢালিয়াছে বুক ! হেথা হোথা অস্থিরাশি ভস্মমাঝে লুকাইয়৷ মূখ ! পরশিয়া অস্থিমালা তটিনী আবার সরি ষায় ভম্বরাশি ধুয়ে ধুয়ে, নিভাইয়া অঙ্গারশিখায় ! বিকট দশন মেলি মানবকপাল— ধ্বংসের স্মরণস্তুপ, ছড়াছড়ি দেখিতে ভয়াল ! গভীর মাখিকোটর আঁধারেরে দিয়েছে আবাস, মেলিয়া দশনপাতি পৃথিবীরে করে উপহাস ! মানবকঙ্কাল শুয়ে ভস্মের শষ্যায়— কাণের কাছেতে গিয়া বায়ু কত কথা ফুসলায় ! তটিনী কহিছে কাণে ‘উঠ ! উঠ ! উঠ নিজা হোতে’ ঠেলিয়া শরীর তার ফিরে ফিরে তরঙ্গ-আধাতে ! উঠ গো কঙ্কাল ! কত ঘুমাইবে জার! পৃথিবীর বায়ু এই বহিতেছে উঠ জারবার ! উঠ গে। কঙ্কাল ! দেখ স্রোতস্বিনী ডাকিছে তোমায় ঘুমাইবে কত আর বিসর্জন দিয়া চেতনায় !