পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
দুই বোন

বিশেষ রুচিকর, সেটাই খাবার সময় হঠাৎ দেখা যায় অবর্তমান। তার কৈফিয়ত মেলে, কিন্তু কোনাে কৈফিয়তকে এ সংসার এতদিন আমল দেয়নি। এসব অনবধানতা ছিল অমার্জনীয়, কঠোর শাসনের যােগ্য; সেই বিধিবদ্ধ সংসারে আজ এতবড়ো যুগান্তর ঘটেছে যে গুরুতর ত্রুটিগুলােও প্রহসনের মতো হয়ে উঠল দোষ দেব কা’কে। দিদির নির্দেশমতাে ঊর্মি যখন রান্নাঘরে বেতের মােড়ার উপর বসে পাক প্রণালীর পরিচালনকার্যে নিযুক্ত, সঙ্গে সঙ্গে পাচক ঠাকরুনের পূর্বজীবনের বিবরণগুলির পর্যালােচনাও চলছে, এমন সময় শশাঙ্ক হঠাৎ এসে বলে, “ওসব এখন থাক্।”

 “কেন কী করতে হবে।”

 “আমার এবেলা ছুটি আছে, চলো, ভিক্টোরিয়া মেমােরিয়ালের বিল্‌ডিংটা দেখবে। ওটার গুমর দেখলে হাসি পায় কেন তােমাকে বুঝিয়ে দেব।”

 এতবড়াে প্রলোভনে কর্তব্যে ফাকি দিতে ঊর্মির মনও তৎক্ষণাৎ চঞ্চল হয়ে ওঠে। শর্মিলা জানে পাকশালা থেকে তার সহােদরার অন্তর্ধানে আহার্যের উৎকর্ষসাধনে কোনাে ব্যত্যয় ঘটবে না, তবু স্নিগ্ধ