পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
দুই বোন

ঘর থেকে আমাকে। এখনি দূর করে তাড়িয়ে দাও।”

 আজ দিদি নিশ্চিত স্থির করে বসেছিল কিছুতেই ঊর্মিকে ক্ষমা করবে না। মন গেল গলে।

 আস্তে আস্তে ঊর্মিমালার মাথায় হাত বুলিয়ে বললে, “কিছু ভাবিসনে, যা হয় একটা উপায় হবে।”

 ঊর্মি উঠে বসল। বললে, “দিদি তোমাদেরই বা কেন লোকসান হবে। আমারো তো টাকা আছে।”

 শর্মিলা বললে, “পাগল হয়েছিস? আমার বুঝি কিছু নেই। মথুরদাদাকে বলেছি, এই নিয়ে তিনি যেন কিছু গোল না করেন। লোকসান আমি পুরিয়ে দেব। আর তোকেও বলছি, আমি যে কিছু জানতে পেরেছি এ-কথা যেন তোর ভগ্নীপতি না টের পান।”

 “মাপ করো, দিদি, আমাকে মাপ করো” এই ব’লে ঊর্মি আবার দিদির পায়ের উপর পড়ে মাথা ঠুকতে লাগল।

 শর্মিলা চোখের জল মুছে ক্লান্ত সুরে বললে, “কে কাকে মাপ করবে বোন। সংসারটা বড় জটিল। যা মনে করি, তা হয় না, যার জন্যে প্রাণপণ করি তা যায় ফেঁসে।”