পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মালোচনা : ২৩ অপক্ষপাত । জগৎ ত কাহাকেও একঘরে করে না, কাহারো ধোপা নাপিত বন্ধ করে না। চন্দ্র সুৰ্য্য রৌত্র বৃষ্টি, জগতের সমস্ত শক্তি সমগ্রের এবং প্রত্যেক অংশের অবিশ্রাম সমান দাসত্ব করিতেছে । তাহার কারণ এই জগতের মধ্যে যে কেহ বাস করে কেহই জগতের বিরোধী নহে। পাপী অসাধুর জগতের নীচের ক্লাসে পড়ে মাত্র, কিন্তু তাই বলিয়া ত তাহাদিগকে ইস্কুল হইতে তাড়াইয়া দিতে পারা যায় না। বাইবেলের অনন্ত নরক একটা সামাজিক জুজু বইত আর কিছু নয়। পাপ নাকি একটা অভাব মাত্র, এই নিমিত্ত সে এত দুৰ্ব্বল যে তাহাকে পিষিয়া মারিয়া ফেলিবার জন্য একটা অনন্ত জাতার আবশ্বক করে না। সমস্ত জগৎ তাহার প্রতিকূলে তাহার সমস্ত শক্তি অহৰ্নিশি প্রয়োগ করিতেছে। পাপ পুণ্যে পরিণত হইতেছে, আত্মম্ভরিতা বিশ্বম্ভরিতার দিকে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িতেছে । সকলে আত্নীয়। নিতান্ত ঘৃণা করিয়া আর কাহাকেও একেবারে পর মনে করা শোভা পায় না । সকলেরই মধ্যে এত ঐক্য আছে। ঘুটে মহাশয় মস্ত লোক হইতে পারেন তাই বলিয়া যে গোবরের সঙ্গে সমস্ত আদান প্রদান একেবারেই বন্ধ করিয়া দিবেন ইহা র্তাহার মত উন্নতিশীলের নিতান্ত অনুপযুক্ত কাজ ! জড় ও আত্মা । পূর্বেই ত বলিয়াছি আমাদের অধিকাংশই অচেতন, একটুখানি সচেতন মাত্র তবে আর জড়কে দেখিয়া নাসা কুঞ্চিত করা কেন ? আমরা একটা প্রকাগু জড়, তাহারই মধ্যে একরতি চেতনা বাস করিতেছে । আত্মায় ও জুড়ে যে বাস্তৰিক জাতিগত প্রভেদ আছে তাহা নহে । অবস্থাগত প্রভেদ মাত্র। আলোক ও অন্ধকারে এতই প্রভেদ ষে মনে হয় উভয়ে বিরোধীপক্ষ । কিন্তু বিজ্ঞান বলে, আলোকের অপেক্ষাকৃত বিশ্রামই অন্ধকার এবং অন্ধকারের অপেক্ষাকৃত উদ্যমই আলোক । তেমনি আত্মার নিক্সাই জড়ত্ব এবং জড়ের চেতনাই জাত্মার ভাব । বিজ্ঞান বলে, স্বৰ্য্যকিরণে অন্ধকার-রশ্মিই বিস্তর, আলোক-রশ্মি তাহার তুলনায় ঢের