পাতা:লক্ষণ সেন - দুর্গাদাস লাহিড়ী.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१० লক্ষণ-সেন । মহে । নবদ্বীপধিপতির সম্মান-সন্ত্রম রক্ষার জন্য যদি স্বহস্তে পুত্রের শিরচ্ছেদ করিতে হয়, সংগ্রাম-সিংহ তাহাতেও অণুমাত্র কুষ্ঠিত নহে। তাদেশ-প্রদানে আপনি আর দ্বিধা করিবেন না ।" যুগপৎ হর্ষে ও বিষাদে লক্ষ্মণ-সেনের হৃদয় আন্দোলিত হইয়া উঠিল। মনে পড়িল-বীরসিংহের সেই সারল্যপূর্ণ মুখ ; মনে পড়িল,—তাহাকে মিথিলায় প্রেরণে র্তাহার অনিচ্ছার বিষয়। মনে গড়িয়া, হৃদয় বিষাদে অভিভূত হইল। কিন্তু সংগ্রাম-সিংহের উৎসাহ-বাস্যরূপ বায়ু-প্রবাহ সে বিষাদ-মেঘ উড়িয়া গেল। মহারাজ মনে মনে কহিলেন,—“সংগ্রামসিংহ ! তোমাদের স্থায় অকপট আমাত্যগণের তাত্মত্যাগ-প্রভাবেই আজি নবদ্বীপ-রাজ্যের এত প্রতিষ্ঠা—এত গৌরব ! তোমাদের এ ঋণ অপরিশোধনীয়।” সংগ্রামসিংহ পুনরপি কহিলেন,—“মহারাজ ! আর মিশ্চিত্ত থাকিবার সময় নাই। শক্রকে আর বাড়িতে দেওয়া কোনমতেই কৰ্ত্তব্য নহে! যুদ্ধ-যাত্রায় যতই বিলম্ব ঘটবে, শক্ৰ ততই বল-সঞ্চয়ে সমর্থ হইবে। অতএব, আর কালবিলম্ব না করিয়া, মিথিলার পথে সৈন্য-দল অগ্রসর করিবার আদেশ প্রদান করুন।” অমাত্য-বর্গ সকলেই সেই মতের সমর্থন করিলেন। সুতরাং আর কোনরূপ দ্বিধ না করিয়া মহারাজ লক্ষ্মণ-সেন মিথিলাঅভিযানে সৈন্ত-পরিচালনের আদেশ দিলেন। গজারোহী, অশ্বারোহী, পদাতিক, তীরন্দাজ, গোলন্দাজ প্রভৃতি বিবিধ বাহিনী মিথিলা-অভিমুখে অগ্রসর করিবার উদ্যোগ-আয়োজন চলিতে লাগিল।

  • * *