পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বশীকরণ
৮১

 রাধা। বাইশ নম্বর ভেড়াতলায়।

 অন্নদা। বাইশ নম্বরটা উনপঞ্চাশের চেয়ে ভালাে হ’তে পারে, কিন্তু জায়গাটা ভালো ঠেক্‌চে না। একে বশীকরণ-বিদ্যে, তা’র উপরে ভেড়াতলা! মাতাজির কাছে মুণ্ডুজিটি খুইয়ে এসাে না!

 আশু। আরে ছি! কী বকো, তা’র ঠিক নেই। তাঁরা হ’লেন সাধু স্ত্রীলােক, সেখানে মুণ্ডুর ভাবনা ভাব্‌তে হয় না। তুমি বুঝেসুঝে ঊনপঞ্চাশে পা বাড়িয়ো।

 অন্নদা। তুমি ভাব্‌চো বাইশ একেবারেই নির্ব্বিষ! তা নয় হে! বিশের উপরেও দুইমাত্রা চড়িয়ে তবে বাইশ! আপাদমস্তক জর্জ্জর হ’য়ে ফিরবে।

চতুর্থ অঙ্ক

বাইশ নম্বরে কন্যার বিধবা মাতা শ্যামাসুন্দরী

 শ্যামা। পেলেগ্ শুনে ভয়ে বাঁচিনে! তাড়াতাড়ি ক’রে পালিয়ে তাে এলুম! কিন্তু অন্নদা ব’লে ছেলেটির আজ যে সেই উনপঞ্চাশ নম্বরে আস্‌বার কথা আছে, সে কি সেখান থেকে চিনে ঠিক এখানে আস্‌তে পার্‌বে? এতে ক’রে খাওয়াদাওয়ার জোগাড় ক’র্‌লেম, সব মাটি হবে না তো? যে তাড়াটা লাগালে, একবার খবর দেবার সময় দিলে না! ঘটক ব’লেচে, ছেলেটি আমার নিরুপমাকে ভালো ক’রে দেখে-শুনে নিতে চায়, ওর পড়াশুনাে গানবাজ্‌না সব পরীক্ষা ক’র্‌বে— তা করুক! কর্ত্তা তো নিরুপমাকে সেই রকম ক’রেই শিখিয়েচেন! বরাবর পশ্চিমে ছিলেন, আমাদের কখনাে তো বন্ধ ক’রে রাখেন নি! তবু ক’ল্‌কাতার ছেলে কী রকম জানিনে! ভয় হয়! আমাদের ধরণ ধারণ দেখে হয় তাে অভদ্র মনে ক’র্‌বে! তা’রা মেয়ের সঙ্গে শেক্‌হ্যাণ্ড করে না কি, কে জানে! হয় তো ইংরাজিতে গুড্‌মর্ণিং বলে। শুনেচি