পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিনিপয়সায় ভােজ
৪৫

 না? আচ্ছা, তবে দাও মুড়িই দাও! (আহার)

 ওহে চন্দ্র, কী ব’ল্‌বো, ক্ষুধার চোটে এই বাসি মুড়ি যেন সুধা ব’লে বােধ হ’চ্চে! অনেক নিমন্ত্রণ খেয়েচি কিন্তু এমন সুখ পাইনি! চন্দ্র, তুমিই সুধাকর বটে কিন্তু আজকে কলঙ্কের ভাগটাই কিছু বেশি দেখা গেল! ডাবও একটা এনেচো দেখ্‌চি, এর জন্যেও স্বতন্ত্র কিছু দিতে হবে না কি?

 হবে না? শরীরে দয়ামায়া কিছু আছে বােধ হ’চ্চে, এখন যদি একটি গাড়ি ডেকে দাও তো আস্তে আস্তে বিদায় হই।

 গাড়ি এখানে পাওয়া যায় না? তবে তো বড়াে বিপদে ফেল্লে? আমি এখন না খেয়ে কাহিল শরীরে দেড়ক্রোশ রাস্তা হাঁট্‌তে পারবো না; যখন সম্মুখে আহারের আশা ছিল তখন পেরেছিলুম। কী ক’রবো! বেরিয়ে পড়া যাক্!

 কী সর্ব্বনাশ! এই সময়ে আবার হরিবাবুর ওখানে যেতে হবে। চন্দ্র, তুমি আজ আমার বিস্তর উপকার ক’রেচো, এখন আর কিছু ক’র্‌তে হবে না, এই ভদ্রলােকের ছেলেটিকে বুঝিয়ে দাও আমি উদয় বাবু নই, আমি আহিরিটোলার অক্ষয় বাবু।

 ও তােমার কথা বিশ্বাস ক’র্‌বে না? সেজন্যে ওকে আমি বেশি দোষ দিতে পারিনে, বােধ হয় তােমাকে ও অনেক দিন থেকে চেনে! যা হােক আর ঝগড়া করবার সামর্থ্য নেই, আস্তে আস্তে হরিবাবুর ওখানেই যাওয়া যাক্। বাপু, যে রকম অবস্থা দেখ্‌চো পথে যদি একটা কিছু ঘটে, দাহ কর্‌বার ব্যয়টা তােমার স্কন্ধে প’ড়বে—আগে থাকতে বলে রাখ্‌লুম।

 চন্দ্র, তুমি আবার হাত বাড়াও কেন হে? তােমাদের কল্যাণে যে রকম সস্তায় আজ নেমন্তন্ন খেয়ে গেলুম বহুকাল আমার আর ক্ষিদে থাক্‌বে না! আরাে কী চাও?

 ও! বকশিষ! সেটা চুকিয়ে দেওয়াই ভালাে! যখন এতোই