পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
ব্যঙ্গকৌতুক

করাে তা’রে আপনার ধন―
আমার হৃদয় প্রাণমন।
শুধু ধূলি শুধু ছাই  মূল্য যার কিছু নাই
মূল্য তা’রে করো সমর্পণ
তব স্পর্শে পরশরতন।
তােমার গৌরবে যবে  আমার গৌরব হবে
একেবারে দিব বিসর্জ্জন
চরণে হৃদয় প্রাণমন।

 আশু। (স্বগত) আর মন্ত্রের দরকার নেই। বশীকরণের আর কী বাকি রইলো! কন্যাটি দেবকন্যা! (প্রকাশ্যে) মাতাজি!

 শ্যামা। কী বাবা!

 আশু। আমাকে আপনার পুত্র ক’রেই রাখবেন, এমন সুবাসঙ্গীত শােন্‌বার অধিকার থেকে বঞ্চিত ক’র্‌বেন না। যা পাওয়া গেল, এই আমি পরম লাভ মনে ক’র্‌চি। মন্ত্রতন্ত্রের কথা ভুলেই গেচি। এখন বুঝতে পার্‌চি, মন্ত্রের কোনো দরকারই নেই!

শ্যামা। অমন কথা বােলাে না বাবা! মন্ত্রের দরকার আছে বৈ কি! নইলে শাস্ত্র—

আশু। সে তো ঠিক কথা! মন্ত্র আমি অগ্রাহ্য করি নে। আমি ব’ল্‌ছিলেম মন্ত্র প’ড়্‌লেই যে মন বশ হয়, তা নয়, গানের মােহিনী শক্তির কাছে কিছুই লাগে না। (স্বগত) মেয়েটি আবার লজ্জায় লাল হ’য়ে উঠ্‌লো! ভারি লাজুক!

শ্যামা। (আত্মগত) ছেলেটি খুব ভালো! কিন্তু একটু যেন লজ্জা কম ব’লে বােধ হয়! মন বশ করার কথাগুলাে শাশুড়ীর সাম্‌নে না ব’ল্লেই ভালাে হ’তো।