পাতা:নীল-দর্পণ.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(৬)

চালের খরচ, না খাতি পেয়ে মর্‌বো, আরে পোড়াকপাল আরে পোড়াকপাল গোড্‌ডার নীলী কল্লে কি? অ্যাঁ! অ্যাঁ!

 সাধু। ঐ ক বিঘা জমীর ভরসাতেই থাকা, তাই যদি গেলো তবে আর এখানে থেকে কর্‌বো কি। আর যে দুই এক বিঘা নোনা ফেলা আছে তাতেতো ফলন নাই, আর নীলের জমীতে লাঙ্গল থাক্‌বে, তা কারকিতী বা কখন কর্‌বো। তুই কাঁদিস্‌নে, কাল হাল গোরু বেচে গাঁর মুখে ঝ্যাঁটা মেরে বসন্ত বাবুর জমীদারিতে পাল্‌য়ে যাব।

(ক্ষেত্রমণি ও রেবতীর জল লইয়া প্রবেশ)

 জল খা, জল খা, ভয় কি, জীব দিয়েচে যে আহার দেবে সে। তা তুই আমিনকে কি বল্যে এলি।

 রাই। মুই বল্‌বো কি, জমিতি দাগ মার্‌তি নাগ্‌লো, মোর বুকি য্যান বিদে ক্যটি পুড়্‌য়ে দিতি নাগ্‌লো। মুই পায় ধল্লাম, ট্যাকা দিতে চালাম, তা কিছুই শোন্‌লে না। বলে, যা তোর বড় বাবুর কাছে যা, তোর বাবার কাছে যা, মুই ফৌজদুরি করবো বল্যে সেঁসয়ে এইচি।

(আমিনকে দূরে দেখিয়া।)

 ঐ দ্যাখ শালা আস্‌চে, প্যায়দা সঙ্গে করে এনেচে, কুটি ধর‍্যে নিয়ে যাবে।

(আমিন এবং দুইজন পেয়াদার প্রবেশ।)

 আমিন। বাঁদ্‌, রেয়ে শালাকে বাঁদ্‌।

(পেয়দাদ্বয় দ্বারা রাইচরণের বন্ধন।)

 রেবতী। ও মা, ইকি, হ্যাঁগা বাঁদো ক্যান। কি সর্ব্বনাশ, কি সর্ব্বনাশ। (সাধুর প্রতি) তুমি দেঁড়েয়ে দ্যাক্‌চো কি, বাবুদের বাড়ি যাও, বড় বাবুকে ডেকে আনো।