পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমালোচনা Ꮌ Ꮍ ☾ এ ব্যাধির সমুচিত ঔষধ নাই । (কারণ চণ্ডিদাসের রাধা শ্বামে যখন মিলন হয় তখন “কুছ কোরে দুহু কাদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া।” কিছুতেই তৃপ্তি নাই, । "নিমিখে মানয়ে যুগ কোরে দূর মানি ।” যখন কোন ভাবনা নাই, যখন স্যামকে পাইয়াছেন, তখনো রাধার ভয় যায় না ;– “এই ভয় উঠে মনে, এই ভয় উঠে, না জানি কাহুর প্রেম তিলে জনি ছুটে । গড়ন ভাঙ্গিতে সই, আছে কত খল, ভাঙ্গিয়া গড়িতে পারে সে বড় বিরল । যথা তথা যাই আমি যত দূর পাই, চাদ মুখের মধুর হাসে তিলেকে জুড়াই । সে হেন বঁধুরে মোর যে জন ভাঙ্গায়, হাম নারী অবলার বধ লাগে তায় ! চণ্ডিদাস কহে, রাই, ভাবিছ অনেক, তোমার পিরীতি বিনে সে জীয়ে তিলেক ।” রাধা আগেভাগে অভিশাপ দিয়া রাখে, রাধা শূন্যের সহিত ঝগড়া করিতে থাকে! এমনি তাহার ভয় যে, তাহার মনে হয় যেন সত্যই তাহার শু্যামকে কে লইল । একটা অলীক আশঙ্কা মাত্রও প্রাণ পাইয়া তাহার সম্মুখে জীবন্ত হইয়া দাড়ায়, কাজেই রাধা তাহার সহিত বিবাদ করে । সে বলে, “সে হেন বঁধুরে মোর যে জন ভাঙ্গায় হাম নারী অবলার বধ লাগে তায় ।” যদিও তাহার বধুকে এখনো কেহ ভাঙ্গায় নি, কিন্তু তা বলিয়া সে স্বস্থির হইতে পারিতেছে কৈ ? যখন স্যাম তাহার সম্মুখে রহিয়াছে, তখনো সে স্যামকে কহিতেছে,— “কি মোহিনী জান বঁধু, কি মোহিনী জান ; অবলার প্রাণ নিতে নাহি তোমা হেন ! রাতি কৈছু দিবস, দিবস কৈতু রাতি, বুঝিতে নারিমু বঁধু তোমার পিরীতি । ঘর কৈছু বাহির, বাহির কৈকু ঘর, পর কৈছু আপন, আপন কৈছু পর।