পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমালোচনা છેર છે কঠোর ব্রত সাধনা স্বরূপে প্রেম সাধনা করা চণ্ডিদাসের ভাব, সে ভাব তাহার সময়কার লোকের মনোভাব নহে, সে ভাব এখনকার সময়ের ভাবও নহে, সে ভাবের কাল ভবিষ্যতে আসিবে । যখন প্রেমের জগৎ হইবে, যখন প্রেম বিতরণ করাই জীবনের একমাত্র ব্রত হইবে ; পূর্বে যেমন যে যত বলিষ্ঠ ছিল সে ততই গণ্য হইত, তেমনি এমন সময় যখন আসিবে, যখন যে যত প্রেমিক হইবে সে ততই আদর্শস্থল হইবে, যাহার হৃদয়ে অধিক স্থান থাকিবে, যে যত অধিক লোককে হৃদয়ে প্রেমের প্রজা করিয়া রাখিতে পারিবে সে ততই ধনী বলিয়া খ্যাত হইবে, যখন হৃদয়ের দ্বার দিবারাত্রি উদঘাটিত থাকিবে ও কোন অতিথি রুদ্ধ দ্বারে আঘাত করিয়া বিফলমনোরথ হইয়া ফিরিয়া না যাইবে, তখন কবির গাইবেন, পিরীতি নগরে বসতি করিব, পিরীতে বাধিব ঘর, পিরীতি দেখিয়া পড়শি করিব, তা বিস্তু সকলি পর। TSTST AAAAS বসন্তরায় । কেহ কেহ অনুমান করেন, বসন্তরায় আর বিদ্যাপতি একই ব্যক্তি । এই মতের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক প্রমাণ কিছু আছে কি না জানি না, কিন্তু উভয়ের লেখা পড়িয়া দেখিলে উভয়কে স্বতন্ত্র কবি বলিয়া আর সংশয় থাকে না । প্রথমত, উভয়ের ভাষায় অনেক তফাৎ। বিদ্যাপতির লেখায়—ব্রজভাষায় বাঙ্গালা মেশান, আর রায়বসন্তের লেখায়—বাঙ্গালায় ব্রজভাষা মেশান । ভাবে বোধ হয়, যেন, ব্রজভাষা অামাদের প্রাচীন কবিদের কবিতার আফিসের বস্ত্র ছিল । শু্যামের বিষয় বর্ণনা করিতে হইলেই অমনি সে আটপৌরে ধুতি চাদর ছাড়িয়া বৃন্দাবনী চাপকানে বত্ৰিশটা বোতাম আঁটিত ও বৃন্দাবনী শামলা মাথায় চড়াইয়া একটা বোঝা বহিয়া বেড়াইত । রায়বসন্ত প্রায় ইহা বরদাস্ত করিতে পারিতেন না । তিনি খানিকক্ষণ বৃন্দাবনী পোষাক পরিয়াই অমনি—“দূর কর” বলিয়া ফেলিতেন ! বসন্তরায়ের কবিতার ভাষাও যেমন, কবিতার ভাবও তেমন । সাদাসিধা ; উপমার ঘনঘটা নাই ; সরল প্রাণের সরল কথা ; সে >\o