পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬২
চয়নিকা

পিছন হইতে দেখিনু কোমল গ্রীবা
লোভন হয়েছে রেশম-চিকন চুলে।
তাম্র থালায় গোড়ে মালাখানি গেঁথে
সিক্ত রুমালে যত্নে রেখেছ ঢাকি’,
ছায়া-হেলা ছাদে মাদুর দিয়েছ পেতে,
কার কথা ভেবে বসে আছ জানি না কি।
আজি এই চিঠি লিখিছে তো সেই কবি
গোধূলির ছায়া ঘনায় বিজন ঘরে,
দেয়ালে ঝুলিছে সেদিনের ছায়া-ছবি,
শব্দটি নেই,—ঘড়ি টিক্ টিক্ করে।
ঐ তো তোমার হিসাবের ছেঁড়া পাতা,
দেরাজের কোণে পড়ে আছে আধুলিটি;
কতদিন হোলো গিয়েছ, ভাবিব না তা’,
শুধু রচি ব’সে নিমন্ত্রণের চিঠি।
মনে আসে তুমি পুব জানালার ধারে
পশমের গুটি কোলে নিয়ে আছ বসে,
উৎসুক চোখে বুঝি আশা করো কারে,
আলগা আঁচল মাটিতে পড়েছে খ’সে।
অর্ধেক ছাপে রৌদ্র নেমেছে বেঁকে,
বাকী অর্ধেক ছায়াখানি দিয়ে ছাওয়া;
পাঁচিলের গায়ে চীনের টবের থেকে
চামেলি ফুলের গন্ধ আনিছে হাওয়া।
এ চিঠির নেই জবাব দেবার দায়,
আপাতত এটা দেরাজে দিলেম রেখে;
পারো যদি এসো শব্দবিহীন পায়
চোখ টিপে’ ধোরো হঠাৎ পিছন থেকে।
আকাশে চুলের গন্ধটি দিয়ো পাতি’,
এনে। সচকিত কাঁকনের রিনিরিন্,