চালের পুঁটুলি ছিল, সেইটা দেখাইয়া কহিল, গন্ধ পেয়েচে এক মুঠো খেতে চায়—
খেতে চায়? তা বটে! যেমন চাষা তার তেম্নি বলদ। খড় জোটে না, চাল কলা খাওয়া চাই! নে নে, পথ থেকে সরিয়ে বাঁধ্। যে শিঙ্ কোন দিন দেখ্চি কাকে খুন করবে। এই বলিয়া তর্করত্ন পাশ কাটাইয়া হন্ হন্ করিয়া চলিয়া গেলেন।
গফুর সেদিক হইতে দৃষ্টি ফিরাইয়া ক্ষণকাল স্তব্ধ হইয়া মহেশের মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। তাহার নিবিড় গভীর কালা চোখ দুটি বেদনা ও ক্ষুধায় ভরা, কহিল, তোকে দিলে না এক মুঠো? ওদের অনেক আছে, তবু দেয় না। না দিক্ গে—তাহার গলা বুজিয়া আসিল, তার পার চোখ দিয়া টপ্ টপ্ করিয়া জল পড়িতে লাগিল। কাছে আসিয়া নীরবে ধীরে ধীরে তাহার গলায় মাথায় পিঠে হাত বুলাইয়া দিতে দিতে চুপি চুপি বলিতে লাগিল, মহেশ, তুই আমার ছেলে, তুই আমাদের আট সন প্রতিপালন করে বুড়ো হয়েছিস্, তোকে আমি পেটপূরে খেতে দিতে পারি নে—কিন্তু তুই ত জানিস্ তোকে আমি কত ভালবাসি।