পাতা:তারাচরিত.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।

আনন্দরসে ভাসমান হইল আবার ততোধিক তাঁহার দুঃখ ও হইল। তখন তিনি তাঁহাকে, সখি তোমার নাম কি,জিজ্ঞাসা করিয়া তাঁহার মুখের দিকে দৃষ্টিক্ষেপ করিলেন। দেখিলেন, যে কিছু দুঃসহ চিন্তার উদয় হইয়াছে; নয়নযুগল অপ্রশস্ত, অধরোষ্ঠ নিমীলিত, মধ্যে ঈষৎ বক্র হইতেছে; মুখ কমল ঈষৎ নত, যেন অকালে পূর্ণ শশধরকে মেঘজলে লুক্কায়িত করিতেছে। তারা দেখিয়া প্রথমতঃ বিস্ময়াপন্ন হইলেন পরক্ষণেই তাহার সে ভাব দূরীভূত হইয়। অন্তঃকরণে প্রণয় সঞ্চার হইতে লাগিল। জিজ্ঞাসা করিলেন ভগিনি তোমার নাম কি? তিনি উত্তর করিলেন রাজনন্দিনি আমার নাম মালতী, আমার ন্যায় দুঃখিনী এই জগতমগুলে আর দ্বিতীয় নাই। আমাকে বিধাতা চিরদুঃখিনী করিয়া সৃষ্টি করিয়াছেন। আমার দুঃখের কথা শুনিলে পাষাণ হৃদয় ব্যক্তিরও মনে দয়া হয়। আমি সৌরাষ্ট্র দেশের রাজার মন্ত্রীর প্রপৌত্রী। শুনিয়াছি দুর্দ্দৈব বশতঃ দেশ পাঠান কর্তৃক অপহৃত হইলে রাজা দেশ পরিত্যাগ করিলেন। সেই শোকে আমার প্রপিতামহ কালের করাল গ্রাসে পতিত হইলেন এবং সেই অবধি আমাদের বংশের ক্রমেই ক্ষীণদশা হইতে লাগিল। এক্ষণে আমাদের সকলেই মরিয়া গিয়াছেন; কেবল আমি এই অসীম কষ্ট ভোগ করিতে রহিয়াছি। যতদিন বালিকা ছিলাম ততদিন গৃহে ছিলাম। এখন যৌবন সীমায় পদার্পণ করিয়াছি আর একাকী থাকা বিধেয় নয় জানিয়া আমার এই ধাত্রী আমাকে আপনার নিকট আনিলেন। তারা শুনিয়া আহলাদ সাগরে