পাতা:তারাচরিত.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
তারাচরিত।

পারিয়াছেন তাঁহারই কেবল প্রশংসার পাত্র হন। দেখ দেখি সতী দাক্ষায়ণী ও সীতাদেবী যেমন নারীকুল চিরউজ্জ্বল করিয়াছেন ইতিহাসে আরও আমন কত উপমা দেখিতে পাওয়া যায়। তবে বল দেখি আমি কেমন করিয়। প্রশংসার যোগ্য পাত্রী হইলাম! এই সকল কথা পৃথ্বীরাঙ্গ অন্তরালে দণ্ডায়মান থাকিয়া শ্রবণ করিলেন। শ্রবণ করিয়া মনে মনে বলিলেন যে আহা এমন মিষ্ট শ্রুতিসুখকর বাক্য ত কখন শ্রবণ গোচর করি নাই। প্রিয়া আমার যেমন মিষ্ট ভাষিণী তেমনি বিচক্ষণ। এমন সকল কথা কি কখন অন্য রমণীতে সম্ভবে। আহা তান লয় বিশুদ্ধ কোকিলের রব আমার এমন মিষ্ট ও স্নিগ্ধকারী বলিয়া বোধ হয় না! অনেক অনেক বার চন্দ্রের জ্যোতি শরীরে লাগিয়াছে বটে কিন্তু তাহাতে আমার তেমন শরীর জুড়ায় নাই, অদ্য এই লোক ললামভূতার সর্বলোক প্রিয় বীরতাপূর্ণ বিশুদ্ধ ভাবযুক্ত মধুময় বচন শ্রবণ করিয়া, বীরকুলোচিত ও সাধুতাসঙ্গত ভঙ্গি সন্দর্শন করিয়া আমি যেমন তৃপ্তিলাভ করিলাম। তিনি হৃদয়কে বলিতে লাগিলেন, হে হৃদয় আশ্বস্ত হও; তোমার আর ব্যাকুল হইবার প্রয়োজন নাই; ঐ মনোমোহিনী তোমার আনন্দদায়িনী হইবেন সন্দেহ নাই; চক্ষু স্থির হও পলকে প্রলয় জ্ঞান করিও না, ইহার পর আর তুমি মুদ্রিত হইতে পারিবে না, সর্ব্বগুণসম্পন্না রমণী তোমার নিকটবর্ত্তিনী হইবেন। এই বলিতে বলিতে তিনি নিজ শিবিরে প্রত্যাগমন করিলেন।