পাতা:তারাচরিত.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৩৯

করিলেন। এইরূপ কথোপথন করিতে করতে তাঁহারা অনেক পথ অতিক্রম করিয়া গেলেন।

 ক্রমে রাত্রি গভীর ভাব ধারণ করিল। দেখিয়া পৃথ্বীরাজ বলিলেন, প্রিয়ে এই গভীর রজনীতে কত স্থানে ব্যাঘ্রের নায় অর্থলোলুপ তস্করগণ অর্থতৃষ্ণায় ইতস্ততঃ বিচরণ করিতেছে—কত স্থানে বা পরানুরাগী লম্পটগণ অতি চকিত ভাবে নিঃশব্দে পরকীয় দ্বারোদঘাটন করিতেছে -কোন গৃহে দীর্ঘ বিরহের পর অপূর্ব্ব মিলন, কোন গৃহে বা দীর্ঘ মিলনের পর ঘোরতর বিরহ ঘটনা হইতেছে—কোথাও বা মানিনী স্ফীতাধরে নায়কের প্রতি কটাক্ষপাত করিতেছে— কোন কুলমহিলা শিশু সান্ত্বনায় ব্যস্ত হইয়া প্রিয়তমের শুশ্রুষায় পরাঙমুখ হইতেছে—কোথাও বা কোন উদ্ধত নবীন যুবা মোহান্ধ হইয়া নব পরিণীতা কামিনীকে পদাঘাত করিতেছে-কাহারাও বা নীরস গৃহ আলাপে মনকে চরিতার্থ করতেছে—কোথাও সপত্নীতে সপত্নীতে কোন্দল করিতেছে—কোথাও বা বিশুদ্ধ বিমল বিদ্যাচর্চ্চা হইতেছে-আহা কেমন সুস্নিগ্ধ মধুময় মন্দ মন্দ নিদাঘানিল বহিতেছে— বৃক্ষপত্রের মর মর শব্দে কর্ণ জুড়াইতেছে-মধ্যে মধ্যে বন্য কপোত সকল গম্ভীর রবে প্রহরির কার্য্য করিতেছে— কুসুমসকল কেমন বিকাশচ্ছলে হাসিতেছে—পবন তালে তালে গান করিয়া কর্ণে সুধা বর্ষণ করিতেছে। পৃথ্বীরাজের এইরূপ কথা সকল শুনিয়া তারার বিমর্ষ মনও কিঞ্চিং সুস্থ হইল। এদিকে রাত্রিও শেষ হইয়া আসিল। কুমুদিনী নায়ক অস্তা-