পাতা:অমরনাথ (কৃষ্ণচন্দ্র রায় চৌধুরী).pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অমরনাথ। >8冷 অমর। এই ত অবস্থা, এক্ষণে উপায় ? আর তো দেশে মুখ দেখান কয় না,-দেশ দূরে থাকুক, আমার পরিবারের নিকটেই বা কি বলি? তারা মনে কোবে হোতেও পারে। মনুষ্যের বাহ দৃষ্টি যেমন সংকীর্ণ, মানসিক দৃষ্টি তেমনই মলিন । ঘোর বিপদ! যত ভাবুচি, ততই বিপদের নূতন নুতন মুর্ত্তি দর্শন কোচ্ছি। এক একবার মনের মধ্যে একটা বিষম গোলযোগ হয়ে সব যেন অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে । সম্প্রতি আমার এমনি জ্ঞান হোচ্ছে যেন কোন সমুদ্রে পতিত হইচি, তার না কুলই আছে, না গাম্ভীর্য্যেরই শেষ আছে । তাতে অন্ধকার রাত্রি মেঘাচ্ছন্ন। কড় কড়ঃ শব্দে মুহুমুহু বজ্রপাত হোচ্ছে। ভীষণ ঝটিকা দ্বারা চতুর্দিকে পর্ব্বত প্রমাণ ঢেউ উঠুচে, এক বার এক বার যে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, তাতে কেবল ঐ ভীমতর তরঙ্গ সকলই দৃষ্ট হোচ্ছে, আর কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না, সে জন্যে প্রাণ অধিকতর আকুঞ্চিত হোচ্ছে। আবার তখনি নিবিড় অন্ধকার যেন এক বিশ্বব্যাপী জালের ন্যায় ঝুপ কোরে পোড়ে এই প্রকাণ্ড জগৎকে আচ্ছাদিত কোচ্ছে । এই যে বিদ্যুৎ, আর এই যে অন্ধকার, এ যেমন দুঃসহ বেদন জন্য মনুষ্য এক বার জ্ঞানশূন্য হয়ে আবার ক্ষণিক চৈতন্য পায়, কিন্তু সে যে চৈতন্য, তাতে কেবল ঐ বেদনারই দুঃসহতার উপলব্ধি হয়, তাতে আরও কাতর করে। বিপদের চরমূই এই! হায় ছায় ! কি আশ্চর্য্য! সংসারের যাবতীয় অনিত্য পদার্থের মধ্যে মনুষ্যের অবস্থার তুল্য ক্ষণভঙ্গুর আর কিছুই নাই। এই নিমিত্তই মহা কবিরা—যাদের বিশ্বদশী চক্ষুর সম্মুখে স্বভাবের সমুদয় ভাণ্ডার প্রকাশমান—ৰ্তারাও উপযুক্ত উপমাস্থল না পেয়ে আকাশের সঙ্গে ইহার তুলনা কোরেছেন । কেন না আকাশ এই পরিস্কার আছে আবার মুহূর্ত্তেকে মেঘাচ্ছন্ন হলো । কিন্তু সে মেঘাচ্ছন্ন হোতে অনু্যন অৰ্দ্ধ ঘটিকাও লাগে, আর মনুষের অবস্থা পরিবর্তন হোতে চক্ষের নিমেষও লাগে কি না সন্দেহ ] কোন ব্যক্তি আপনার বৈঠকখানায় বোসে