পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& ove রবীন্দ্র-রচনাবলী . . স্বৰ্য্য পশ্চিমে অস্ত যায়। গাছের তলায় অন্ধকার । পুকুরের জল কালে দেখাচ্চে। বুড়ী নদীর ধারে চুপড়ি নিয়ে শাক তুলচে। হাট থেকে কানাই ফিরে আসে। চাষীরা মাঠের থেকে ফিরে আস্চে । সন্ধ্যার তারা জলচে । ছেলেরা তাদের মার কাছে এলো। মন্দিরে ঘণ্টা বাজচে । মেয়ের ঘরের দুয়ারে প্রদীপ জাললো। পার্থীরা বাসায় ফিরে এসেছে। শেয়ালগুলো জঙ্গলে ডাক্ছে। বাদুড়গুলো দলে দলে উড়ে চ’লেচে । கை ঘণ্টা বাজচে ? রেবা, তোমার জলখাবার শেষ হয়েচে ? আর দেরী ক’রো না। চলো, আমরা যাই। সব বই নিয়েচো ? পেন্সিল কোথায় ? তাড়াতাড়ি হাটো। ঐ যে ছেলেমেয়েরা সব ব’সেচে। মাষ্টার মশায় এখনো আসেন নি। তবে তাড়াতাড়ি ক’রো না । অঙ্কটা শেষ ক’রেচো ? কেন, কাল সন্ধ্যায় বেড়াতে গিয়েছিলে ? তোমার মাসী এসেচেন ? আমারও অঙ্কটা শক্ত লাগলো। অনেকক্ষণ চেষ্টা করেছিলাম। ক্লাস্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। চলে, মাষ্টার মশায়ের ডান দিকে বসি । এ দিকটায় একটু পরেই রোদ আসবে। তোমার শীত ক’রচে না ? আমার শীতের হাওয়ায় কাপুনি ধ’রেচে। উঠে দাড়াও, ঐ যে মাষ্টার মশায় আসচেন । যদু, আর সবাই কোথায় ? তা'রা সব তৈরী ? এসো, মালগুলি গাড়ীতে ওঠানো যাক । গাড়োয়ানকে ডাকে । আর সময় নেই। ঐ যে সবাই আসচে। চলে, হেঁটে ষ্টেশনে যাওয়া যাক। ষ্টেশন বেশি দূর নয়। আধ ঘণ্টায় পৌঁচাতে পারবো। মধু, জিনিষগুলি গুনে নাও—এই নাও গাড়ীভাড়া। তোমরা এগুলো প্লাটফৰ্ম্মে বয়ে নিয়ে যেও, কুলি ডেকো না । তোমাদের ট্ৰেণ-ভাড়া আমায় দাও, আমি সবার জন্য টিকেট কিনবো। কী ভিড় ! লোকগুলো বোকার মতো কেন ঠেলাঠেলি করে! আমায় কলকাতার সাতখানা টিকেট দেবেন। গাড়ী আসচে, ঘণ্টা বেজে গেচে ।