পাতা:অসমীয়া সাহিত্য.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বরঞ্জী সাহিত্য ○○ মহাগৌরবের কিছুমাত্র লাঘব হয় নাই—আমাদের দুই রাজ্যের মধ্যে যেন বন্ধত্বের সত্র ছিন্ন না হয়। অহম রাজও তার প্রতিধৰনি করিয়া বলিলেন—বন্ধন, সয" একবার অস্ত গেলেও পুনরায় প্রাতে উদিত হয়, আমি পুনরায় যুদ্ধের আয়োজন করিতেছি, আপনিও করন। F সন্ধির শত নাযায়ী আওরঙ্গজেব প্রদত্ত খেলাত’ যখন দিল্লীশ্বরের দতেরা মহারাজ চক্রধর সিংহকে উপহার দিয়া দরবারে পরিবার জন্য অনুরোধ করেন তখন তিনি চীৎকার করিয়া বলেন—স্বাধীনতার চেয়ে এক প্রসথ কাপড়ই কি বেশী মলোবান—এর চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়। দাতিরাম হাজারিকা বিরচিত কলিভারত বরঞ্জী ও বিশেবশবর বৈদ্যাধিপ বিরচিত বেলিমারব বরঞ্জী' এই দুইটি পুস্তক অসমর পদ্য বরঞ্জী’ নামে সম্পাদিত হইয়াছে। “প্রাচীন অসমীয়া পদপুথি কীৰ্তন, বার্যকন্ধ ভাগবত, রামায়ণ মহাভারত আদি কুকুতা ৰ অনা বাঘ বা ছল এই কাজ লং আনা বাঘ করা হেচে । পড়বে রণ ভৈল যেন বলী বাসবর বিষয় অনিত্য জানি ভজিয়োক চক্রপাণি গুচিবে সংসার দুঃখ ভয় ।” চন্দ্রকান্তর জগন্নাথমতি দশন সম্পকে কবির বর্ণনা যে কোনো প্রসিদ্ধ বৈষ্ণব কবির সমতুল্য— মেঘসম শ্যাম তন গায়ে পীতবাস সজল মেঘত যেন বিদ্যুৎ প্রকাশ। পাদশাহ বরঞ্জী একটি বিশিস্ট ধরনের বরঞ্জী। মুসলমান রাজত্বের প্রথম হইতে মাঘলবংশের আওরঙ্গজেব, আজমতারা পর্যন্ত অসমীয়ার দটিতে সপ্তদশ শতাব্দীতে রচিত এক কাহিনী। পিথোর রাজা, তৈমুর, হুমায়ন, শের শা, জাহাংগীর, মানসিংহ, শাহজাহান, মমতাজমহল, মীজারাজা জয়সিংহ, দারাশিকো, সালতান সজা, শায়েস্তাখনি, শিবাজী, গর তেগবাহাদর, রামসিংহ, মীরজমেলা, আজমতারা প্রভৃতি বিশিষ্ট বাপ্তিদের নানা কাহিনী অতি সন্দের ভাবে ও ভাষায় বণিত হইয়া ইহাকে কথাসাহিত্যে পরিণত করিয়াছে । ত্রিপরা বরঞ্জীও এইরুপ একটি বিশিষ্ট ধরনের বরঞ্জী। এই বরঞ্জীর ভাষা সহজ, গতিময় ও উচ্চাঙ্গের। কাহিনীগুলি সন্দরভাবে সজিত, প্রত্যেক কাহিনীর পবে কয়েকটি বাক্যে এমন করিয়া ভূমিকা জড়িয়া দেওয়া আছে যে, আখ্যায়িকাকে অনুসরণ করিতে কিছমাত্র কন্ট হয় না। আসামের বাহিরে বহন দেশের পণ্যদ্রব্য ও আচার-বিচারের বণনা করিতে গিয়া লেখকদ্বয় (কটকী রত্নকন্দলী শমা ও অজানদাস বৈরাগী—মহারাজ লগদেব রদ্রসিংহের ত্রিপরোরাজ্যে দতদ্বয়) অনেক বৈদেশিক কথা ব্যবহার করিয়াছেন যাহা ভবিষ্যৎ ভাষাতত্ত্ববিদের পক্ষে শিক্ষণীয় ও বিচারের বস্তু হইবে। মোটের উপর সমস্ত ত্রিপরা বরঞ্জী তৎকালীন অসমীয়া গদ্য ও ঐতিহাসিক সাহিত্যের নমনাহিসাবে সাধারণ বরঞ্জীর উপরে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করিয়া আছে।’