পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢ २ আমার বাল্যকথা হয়, এই তার অন্তবিক ইচ্ছ। তিনি প্রথমে তার ধনবল একত্র করে জাতীয় শিল্পবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সহায়তা করেন, পরে যখন সেই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা তার মনঃপূত হ’ল না, তার স্থায়িত্বের প্রতি সন্দিহান হ’লেন তখন সেখানকার দান উঠিয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান-কলেজ সংস্থাপন উদ্দেশে নূতন দান ব্যবস্থা করলেন—সামান্ত দান নয় স্থাবর সম্পত্তি মিলে সাড়ে সাত লাখ টাকারও উপর । দানপত্রের ব্যবস্থা দু কথায় এই যে, প্রস্তাবিত বিজ্ঞান-কলেজে—পদার্থ-বিদ্যা ও রসায়ন-বিদ্যা এই দুই বিদ্যায় দুইটি আসন প্রতিষ্ঠিত হবে-এই প্রথম । দ্বিতীয়, ইহাও বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য যে এই শিক্ষাকার্য্যে, দেশীয় লোকেরাই অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হবেন । যদি তাদের যোগ্যতা অৰ্জ্জনের নিমিত্ত বিদেশে শিক্ষালাভ কর। অবশ্যক হয় তাহলে এই ব্যবস্থাপত্রের কর্তৃপক্ষদের বিবেচনায় যাহ। ধর্য্য হয় সেইরূপ শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করা হবে। কিছুদিন পূর্ব্বে এই নিয়মগুলি লিপিবদ্ধ ও দানপত্র গঠিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমর্পিত হয়েছিল । সম্প্রতি আবার প্রায় আরও আট লক্ষ টাকার বিষয় তিনি লেখাপড়া করে সেনেটের হাতে সমর্পণ করেছেন । এই শুভকার্য্য সুসম্পন্ন করে এখন তিনি নিরুদ্বিগ্ন মনে তার শেষ দিন প্রতীক্ষা করে রয়েছেন, ভূত্য যেমন মাসের শেষে আপনার বেতন প্রতীক্ষা করে থাকে—“কালমেব প্রতীক্ষেত নির্দেশং ভূতকে যথা ।” এই বিরাট দান উপলক্ষে য়ুনিবারসিটির Vice-Chancellor মহোদয় বলেছেন :– "প্রেমচাঁদ রায়র্চাদ, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, গুরুপ্রসন্ন ঘোষ, দ্বারবঙ্গাধিরাজ প্রভৃতি মহাত্মাগণ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাখে লাখে টাকা দান করিয়া আমাদেব গৌরবের পাত্র হইয়াছেন সত্য কিন্তু তারকনাথ পালিত মহাশয় তার এই অসামান্ত বদান্ততাগুণে আর সকলকে পরাস্ত করিয়৷ এই দাতৃমণ্ডলীর শীর্ষস্থানীয় হইয়া রহিলেন ।” ছেলেবেলা থেকেই তারকনাথ পালিত তেজস্বী, এইখানে তার বাল্যকালের তেজস্বিতার একটি পরিচয় প্রদান করি। আমরা দুই বন্ধু প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে মেডিকেল কলেজে কেমেষ্ট্রীর লেকচার শুনতে যেভুম। একদিন প্রোফেসর আসার আগে আমরা দুজনে একটু চেচিয়ে কথা কচ্ছিলুম। মেডিকেল কলেজের একজন ফিরিঙ্গীর বাচ্ছ তাইতে রূঢ়স্বরে বল্লে –“This is not a Bazar. Don’t make such a row”—তারক তাই শুনে ভারী রেগে উঠলেন আর বেশ কুকথা শুনিয়েও দিলেন। তখনই প্রোফেসার আসায় তখনকার মত বিবাদটা ঐখানেই থেমে গেল, কিন্তু লেকচার হয়ে যাবার পর ৫৬ জন ফিরিঙ্গাপুঙ্গব দল বেঁধে তাকে আক্রমণ করতে এল, তিনি তাতে ভয় না পেয়ে দেওয়ালের দিকে পিঠ করে সর্বাগ্রে দলপতিকে এক ঘুসি বসিয়ে দিলেন । তখন চেলাগণ র্হ র্হ করে তার উপর এসে পড়লে, ৪৫ জনে