পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8? আমার বাল্যকথা বিষয়ে কথা হয়। আমি বিনীতভাবে নিবেদন কবেছিলুম যে, কলেজের বিদ্যার্থীদের বিশুদ্ধ সংস্কৃত উচ্চাবণ শেখাবার একটা সুব্যবস্থার প্রয়োজন। তিনি আমার একথা হুট করে উড়িয়ে দিলেন। বল্লেন, “এদেশে যে উচ্চাবণ চলিত তাই ঠিক—মেড়য়াবাদীদের কাছে আমরা আবার উচ্চারণ কি শিথব ? আর কোন প্রদেশকেই বা উচ্চারণের মানদণ্ড বলে গ্রহণ করা যেতে পাবে ?” কিন্তু এ তর্কের মীমাংসা গায়ের জোরে হয় না। সংস্কৃতের কোন বর্ণের কি উচ্চারণ তা পরীক্ষা করবাব অনেক উপায় আছে, অব সে পরীক্ষায় বাঙ্গলা-সংস্কৃত উচ্চারণের ভ্যাজাল ধবা পড়বেই। "ভাষা বিজ্ঞানের পারিপাট্যে সংস্কৃত অতুলনীয়। ভাষায় যতগুলি উচ্চাবণ ঠিক ততগুলি বর্ণ সংস্কৃত বর্ণমালায় স্থান পাইয়াছে। প্রত্যেক বর্ণের একটিমাত্র নির্দিষ্ট উচ্চাবণ।” কিন্তু এদেশে আমরা কি সংস্কৃত বর্ণের যথানির্দিষ্ট উচ্চারণ বক্ষা করি ? তা ত নয়। আমবা বর্গীয় জ, অস্তস্থ্য য, দুষ্ট ব, মূৰ্দ্ধণ্য ণ, দন্ত্য ন, তালব্য মূৰ্দ্ধণ্য ও দন্ত্য স এই সকল ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের উচ্চারণে কোন প্রভেদ মানি না। যুক্তক্ষরে প্রতি বর্ণের পৃথক উচ্চারণ না করে বাঙলা ধরণে এক বিকৃত উচ্চারণ করে থাকি ; যথা— & কৃষ্ণ ( ষণ )= কিষ্ট। আত্মা = অন্ত। স্বান = স্তান। ক্ষীর ( কৃষীর ) = ক্ষীব ইত্যাদি । অন্তস্থ য'র পৃথক উচ্চাবণ বাঙ্গলায় তাদেী নাই, যুক্তক্ষবেও নহে। সংযুক্তবর্ণে ‘য’কারের উচ্চারণ হয় না—যে অক্ষরে সংযুক্ত থাকে তার দ্বিরুক্তির মত উচ্চারণ হয়, যেমন— সত্য = সত্ত। বাদ্য = বাদ ইত্যাদি। t বাঙ্গলার অনেক স্থলে ‘অ’কারেব উচ্চারণ প্রাকৃত ত্বস্ব ‘ও’কারের মত, যথা—অরি অসি ইত্যাদি। সংস্কৃত উচ্চাবণের বেলাতেও আমরা এই নিয়ম অনুসরণ করি । বাঙ্গল উচ্চারণের নিয়ম সংস্কৃত উচ্চাবণে অরোপিত হয় বলে এখানে সংস্কৃতের উচ্চারণ এরূপ দূষিত হয়েছে। তাই বলছি সংস্কৃতের মত ঠিক উচ্চারণ করতে হ’লে আমাদের রীতিমত সংস্কৃত উচ্চারণ শিক্ষার প্রয়োজন। একথা সত্য যে ভারতবর্ষের অন্তান্ত প্রদেশে সংস্কৃত উচ্চারণের বিশুদ্ধতা কোন কোন অংশে নষ্ট হয়েছে, কিন্তু এবিষয়ে বাঙ্গল দেশের কাছে অব সকলকেই হার মানতে হয়। এদেশে সংস্কৃত উচ্চারণ যেরূপ বিকৃতি ধারণ করেছে এমন আর কোথাও দেখি নাই। বারাণসী বল, দাক্ষিণাত্য বল, এসকল স্থানের যে কোন পণ্ডিত হোন তাদের উচ্চারণ যে আমাদের