পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস - &ed শিবাজীর শাসনপ্রণালী শিবাজী রাজার অভু্যদয়ের প্রথম অবস্থায় তাহার রাজ্যের আয়তন কতটুকু ছিল অল্পকালের মধ্যে সেই রাজ্য যে কি বিপুল বিস্তার লাভ করিল তাহ ভাবিয়া দেখিলে আশ্চর্য হইতে হয়। শিবাজীর শেষাবস্থায় দাক্ষিণাত্যে তাহার প্রতাপ অতুলন, তাপ্তী নদী হইতে কাবেরী পর্য্যন্ত হিন্দু মুসলমান সকল রাজার রাজেশ্বররূপে তিনি একবাক্যে গৃহীত হইলেন। শিবাজী রাজার রাজ্যলাভে যেমন চাতুর্য্য, রাজ্যসংগঠন এবং শাসনকার্য্যেও তেমনি তিনি সুদক্ষ ছিলেন। অর্জন ও রক্ষণ ক্ষমতা যার একাধারে এইরূপ যোগক্ষেমসম্পন্ন মহাপুরুষ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। শিবাজীকে সেই মহাপুরুষদের আসনে স্থান দিতে হয়। র্তাহার রাজ্যশাসনপ্রণালী বিচারযোগ্য, অধুনাতন সভ্যজগতের মাপদও দিয়া মাপিয়া দেখিলেও তাহাকে হেয় জ্ঞান করা যায় না । সংক্ষেপে তাহার বিশেষ বিশেষ লক্ষণ নিম্নে প্রদশিত হইতেছে ;--- প্রথম। এক একটি গিরিদুর্গ এক এক প্রদেশের কেন্দ্রস্থল মারাঠী ইতিহাস ( বপুর ) লেখকের বলেন, শিবাজী রাজা ক্রমশঃ ২৮, সংখ্যক গিরিদুর্গ হস্তগত করেন । এই সকল দুর্গ নির্ম্মাণ এবং সংস্কার কার্য্যে তিনি বিশেষ মনোযোগী ছিলেন, তাহাতে যত পরিশ্রম যতই অর্থব্যয় হউক না কেন কিছুমাত্র শৈথিলা করিতেন না । শত্র আক্রমণ বল, আত্মরক্ষাই বল, মারাঠী রাজ্য স্থাপনের সময় প্রথম প্রথম দুয়েতেই এই সকল দুর্গের বিশেষ উপযোগিতা ছিল। এই সকল বন্ধনী মারাঠী সাম্রাজ্যের বন্ধন, বিপদের সময় ইহারাই রক্ষা-কবচরূপে ব্যবহৃত হইত। এই সকল দুর্গ যাহাতে সুরক্ষিত থাকে শিবাজী তাহার রীতিমত ব্যবস্থা করিতে ক্রটি করেন নাই। দুৰ্গরক্ষণে একজন মারাঠা হাওয়ালদার এবং তাহার কয়েকজন সহকারী নিযুক্ত ছিল। তাহার দেওয়ানী ও রেবেক্ষু্য কার্য্যভার একজন ব্রাহ্মণ সুবেদারের হাতে— দুর্গের অধীনস্থ গ্রামসমূহের কার্য্য তাহার অন্তর্গত । আর একজন প্রভূজাতীয় কর্ম্মলগ্ন) ধান্ত ও রসদ যোগাইবার এবং জীর্ণসংস্কারের কাজে নিযুক্ত । এইরূপ বিভিন্ন তিনবণের লোক এক কর্ম্মস্থত্রে বাধ, পরম্পরের প্রতিযোগিতায় সুশৃঙ্খলভাবে কার্য্য চলিত । নীচে রামোসী প্রভৃতি নিকৃষ্টজাতীয় লোকের প্রহরীর কাজে নিযুক্ত থাকিত। সুরের আয়তন ও উপকারিতা অনুসারে দুর্গপালের সংখ্যা । এক একজন নায়কের অধীনে নয় জন সিপাই ; বন্দুক, তলবার, বর্ষা পট্টী—এই সকল অস্ত্রে তাহারা সুসজ্জিত। ইহার