পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

; > 8 আমার বোম্বাই প্রবাস তুকারামের পত্র পাঠে রাজা কিছুমাত্র বিরক্ত না হইয়া বরং সন্তুষ্টই হইয়াছিলেন— এমন কি তিনি স্বয়ং সাধুর আলয়ে গিয়া তাঙ্গার দর্শনে হইলেন। কথিত আছে যে, বীরবর সেকন্দর বাদলা প্রসিদ্ধ গ্রীক্ দার্শনিক দায়োজিনিসের প্রশংসা শ্রবণ করিয়৷ র্তাহাকে আনাইবার জন্ত দূত প্রেরণ করেন। কিন্তু দায়োজিনিস র্তাহার নিকট গমনে অস্বীকৃত হইলে সেকনার নিজেই গিয়া তাহার সহিত সাক্ষাৎ করেন। তুকারাম ও শিবাজী সম্বন্ধেও এইরূপ ঘটনা বর্ণিত আছে। ঐ সময়ে তুকাবাম দেন্থর নিকটবর্ত্তী লোহগ্রামে বাস করিতেছিলেন--মহারাজ স্বয়ং তথায় উপস্থিত হইয়া বহুমূল্য মণিমাণিক্য রত্নাদি আনিয়া তাহাকে উপহার দেন কিন্তু তুকারাম সে সমস্ত অগ্রাহ করিয়া ফেলিয়া দিলেন—বলিলেন “মহারাজ ! সোনা রূপা আমার চক্ষে মাটির তুল্য, এ সকল বস্তুতে আমার লোভ হয় না। আমাদের মোহ ও অtশার অন্ত হইয়াছে, আমি হরির দাস, হরিই আমার আশা ভরসা। মহারাজ, তুমি ভগবদ্ভূক্ত হইয় প্রজাপালনে নিযুক্ত থাক, তাহা হইলেই আমি কৃতার্থ হইব ।” শিবাজী তুকারামের নিম্পূহত ও অচলা দেবভক্তি দেখিয়া চমৎকৃত হলেন । মহীপতি বলেন যে, মহারাজা তুকারামের সাধু দৃষ্টান্ত ও সংসর্গগুণে সংসারের প্রতি এরূপ বীতরাগ হইয়াছিলেন যে, তিনি রাজকার্য্য পরিত্যাগ করিয়া অরণ্যবাসে কালহরণ করিতে লাগিলেন। শিবাজীর মাতাঠাকুরাণী জীজাবাই এই বৃত্তান্ত শ্রবণ করিবামাত্র ব্যাকুল অন্তরে তুকারামের নিকট গমন করিয়া আপনার পুত্রটিকে সছুপদেশ দ্বারা ংসারে ফিরাইয়া আনিবার জন্ত বিস্তর মিনতি করিলেন । তুকারাম তাহাকে আশ্বাস দিয়া কহিলেন—“ভয় নাই, তোমার মনস্কামনা পূর্ণ হইবে।” রাত্রিকালে সঙ্কীর্তনের সময় শিবাজী রাজা সমাগত হইলে অবসর বুঝিয়া তুকারাম তাহাকে এইরূপ উপদেশ দিলেন যে, যাহার যে ধর্ম্ম তাহার তাহ পালন করা কর্ত্তব্য । প্রজীপালন ক্ষত্রিয় ধর্ম্ম, অতএব মহারাজ তাহাই অনুষ্ঠান করুন। সে ধর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া সন্ন্যাস অবলম্বন করা মহারাজের পক্ষে কোন ক্রমেই কর্ত্তব্য নহে। এই উপদেশ গীতোক্ত ধন্মের অনুযায়ী “স্বধর্ম্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্ম্মে ভয়াবহঃ । শ্রীকৃষ্ণের উপদেশে যেমন অর্জুনের, ইহাতে সেইরূপ শিবাজীর চৈতন্য হইল। তাহার বিষয় বৈরাগ্য দূর হইল, তিনি স্বীয় কর্ত্তব্য বুঝিতে পারিয়া তাহার মাতার সঙ্গে স্বরাজ্যে প্রত্যাগমনপুর্ব্বক পুনরায় রাজ্যভার গ্রহণ করিলেন । শিবাজীর প্রতিভাবলে যে মহারাষ্ট্র রাজ্যের পত্তন হয়, তাহ অনতিকাল মধ্যেই ভারতবর্ষে প্রাধান্ত লাভ করিল। কিন্তু শিবাজীর বংশজ রাজগণের মধ্যে কেহই তাহার পদমর্যাদা রক্ষা করিতে পারে নাই। র্তাহার পুত্র শম্ভোজী ব্যসনাসক্ত নিতান্ত অকর্ম্মণ্য