পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२२ আমার বোম্বাই প্রবাস প্রথম মারাঠা যুদ্ধ গবর্ণমেণ্ট বম্বের সাহায্যে একদল সৈন্ত প্রেরণ করেন। তাহদের আগমন অপেক্ষ না করিয়া বোম্বাই গবর্ণমেণ্ট যুদ্ধে কটিবদ্ধ হইলেন। বম্বের সৈন্তাধ্যক্ষ কর্ণেল এজটন"। তাহার যে একাধিপত্য তাহী নহে, তাহার উপর আবার এক যুদ্ধকমিটির অধিকার । এই অল্প সৈন্য লইয়া মহারাষ্ট্র গর্ভে প্রবেশ করা যত সহজ মনে হইয়াছিল, ফলে দেখা গেল তত সহজ নয়। ব্রিটিষ সৈন্ত যত অগ্রসর হয়, মারাঠীর আশপাশ প্রদেশ অগ্নিসাৎকরতঃ-তত পিছু হটে । ইংরাজ সৈন্ত তলেগাম গিয়া দেখে সকলি ভস্মরাশি—লোকজন গ্রাম ছাড়িয়া পলায়ন করিয়াছে। দুদিন পরে কমিটি হইতে সৈন্ত প্রত্যাবর্তনের হুকুম আসে। যদিও কোন কোন বিচক্ষণ ব্যক্তির ইহাতে অমত ছিল, তথাপি এই আদেশমত কার্য্য করিতে হইল । রাত্রে ভারি ভারি তোপসকল ডোবার মধ্যে নিক্ষিপ্ত হইল। বেশীর ভাগ জিনিসপত্র অগ্নিকুণ্ডে আহুতি দিয়া ব্রিটিষ সৈন্ত ফিরিল । কমিটি ভাবিয়াছিলেন সৈন্তের নিঃশব্দে ফিরিয়া আসিবে, কেহ কিছু জানিতেও পরিবে না। সকাল হইতে না হইতেই শক্রদলের গোলাবৃষ্টিতে ইংরাজ সৈন্তের স্বপ্নভঙ্গ হইল, সন্ধ্যার সময় সে সৈন্ত অনেক কষ্টে বড়গাম পৌছে। পর দিন প্রভাত হইতে তাহদের উপর পুনর্ব্বার গোলাবর্ষণ হইতে লাগিল— অবশেষে ব্রিটিষ সেনা হার মানিয়া সন্ধির প্রস্তাবে সম্মত হইল । ইংরাজদের এমন হার আর কখন হয় নাই। মারাঠীরা যাহা চাহিলেন তাহ পাইলেন, ইংরাজের সালসেট প্রভৃতি র্তাহীদের কতকগুলি অধিকৃত প্রদেশ ফিরিয়া দিতে স্বীকৃত হইলেন । সিন্দের ভোগে ভরুচ অর্পণ এবং তাহার অনুচরবর্গের মধ্যে প্রচুর অর্থ বিতরণে র্তাহার মনস্তুষ্টি সাধিত হইল। ইংরাজদের দর্প চূর্ণ।—এই কলঙ্কপূর্ণ বড়গাম সন্ধি বোম্বাই গবর্ণমেণ্ট অনুমোদন করিলেন না। সুপ্রীম গবর্ণমেণ্ট অন্ততর প্রস্তাব করিয়া পাঠাইলেন– তাহা মারাঠীদের অগ্রাহ হইল । পুনর্ব্বার যুদ্ধারম্ভ। জেনেরল গডার্ড এই সঙ্কটে জেনেরল গডার্ড বম্বে সৈন্তের সাহায্যে আগমন করেন । তিনি তখন বনোলখণ্ডে ছিলেন । তথা হইতে বিশ দিনের মধ্যে একেবারে ৩০০ মাইল কুচ করিয়া সুরাটে আসিয়া পৌছিলেন। প্রথমে গুজরাট, পরে কোঙ্কন তাহার রণক্ষেত্র । ১৭৮০ সালে তিনি মারাঠীদের উপর জয়লাভ করিয়া বাসীন অধিকার করেন।