পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্প ৫২৫ চূড়ান্ত উদাহরণ। তারাপদ" লেখকের এক অদ্ভুত স্বষ্টি। এই সঞ্চরণশীল, প্রবহমান, চিরচঞ্চল পৃথিবীর প্রাণের সহিত তাহার এক আশ্চৰ্য্য সহীহুভূতি ও গভীর একাত্মতা আছে । মানুষের এই অবিশ্রাস্ত গতিশীলতা নাষ্ট বলিয়াই তাহার ভালবাসার মধ্যে এমন একটা প্রবল মোহ ও সঙ্কীর্ণ আসক্তি দেখা যায় । তারাপদর স্নেহবন্ধনের মধ্যে ধরিত্রীমাতার সেই উদার অনাসক্ত ভাব, সেক্ট শিথিলত এ পক্ষপাতহীনতা আছে । মানুষ নিজের জন্য যে ছোট ছোট ঘর রচনা করে, তাহার চারিদিকের স্নেহের বেষ্টনের মধ্যে এক গাঢ়তর মোহাবেশ আছে— প্রকৃতির স্নেহে কোনো মোহাবেশ, কোনো ব্যাকুল বাপসজলত নাই। তারাপদ প্রকৃতির এই উদার অনাসক্তি, এই মোহমুক্ত চিরচঞ্চলতার মহুয়া প্রতিরূপ। ওয়ার্ডসওয়ার্থ তাহার লুসি, রাথ ও অন্তান্ত গ্রাম্য নরনারীব চিত্রে প্রকৃতির কল্যাণী মূৰ্ত্তির একটা বিশেষ দিক্‌কে আকার দিয়াছেন–কিন্তু তাহার এই মূৰ্ত্তিকল্পনা মূলত তাহার প্রকৃতিবিষয়ক দার্শনিক মতবাদের কবিত্বময় রূপান্তর । যাহার সেই দার্শনিক মতবাদে বিশ্বাস নাই, সে এই চিত্রগুলির বৈধতায় ও নৈতিক উৎকৰ্ষবিষয়ে সন্দিহান হইবে । কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তাহার তারাপদর চরিত্রে প্রকৃত্তির সহিত যে সম্পর্কের ইঞ্জিত দিয়াছেন তাঙ্কা কোন বিশেষ দার্শনিক মতবাদের উপর নির্ভর করে না, সৰ্ব্বসাধারণের স্বাধীন অকুভূতিই তাহার রসোপলব্ধি করিতে পারে। ‘তারাপদ’র সহিত “আপদ গল্পের নীলকণ্ঠের কতকটা অবস্থাগত সাদৃশ্য আছে এবং এই দুইটি চরিত্রের তুলনা করিলে তারাপদ-চরিত্রের গুঢ় মাধুৰ্য্য ও পবিত্রতা বিশেষরূপ বুঝা যাইবে । তারাপদ তাহার অবারিত সহজ প্রাণের বলেই মতিবাবুদের পরিবারের সহিত মিলিত হইয়াছে ; নীলকণ্ঠ জলমগ্ন হুইয়া দৈববশে কিরণদের রাগানবাড়ীতে আসিয়া পড়িয়াছে। একের অবাধ, অসঙ্কোচ আতিথ্যগ্রহণ ; অপরের কুষ্ঠিত অমৃগৃহীতের ভাব । তারপর পরম্পরের চরিত্রান্থরূপ উভয়ের মনোরঞ্জনের উপায়ও বিভিন্ন—তারাপদ সাতার দিয়া, কাজকর্শ্বে সাহায্য করিয়া, নিজ সহজ শক্তির অবলীলাক্রম বিকাশে ও দাওরায়ের পাচালী গাহিয়া কৰ্ত্ত গৃহিণী হইতে আরম্ভ করিয়া মাঝিমাল্লাদের পর্য্যন্ত মনোহরণ করিয়াছে। নীলকণ্ঠ যাত্রার দলের গানের দ্বারা, কতকটা অভিনয়ের কৃত্রিম উপায়ে কেবল কিরণবালার প্রিয়পাত্র হইয়াছে, তাহার প্রচও দেীরাত্ম্যের জন্ত বাড়ীর অপর সকলের বিরক্তিভাজন হুইয়াছে। তারপর তারাপদর উদার হৃদয়ে ঈর্ষ্য, অভিমান প্রভৃতির লেশমাত্র নাই— প্রকৃতিমাতার ভস্থপানে লালিত, তাহার অন্তঃকরণে ८कांन अकौर्षष्ठांन्न झांग्नl *tफ़ नाहे । नौजक% किब्रटलद्र ८न्नाइब्र छात्र जड़ेब्र। गाउँौदलब्र थङि झेर्षानब्रवल इहेग्नाटक ও চৌর্ধ্যরূপ হেয় কৰ্ম্মে পর্যাপ্ত নামিয়াছে। কিন্তু প্রকৃতি তাহাকেও কতকটা ঔদার্ষ্য ও স্নেহশীলতা হইতে বঞ্চিত করেন নাই ; তাহার ঈর্ষ্যাপরায়ণতা তাহার বঞ্চিত, স্নেহৰুভূক্ষু হৃদয়ের একটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া মাত্র, ইহাতে নীচতার কোন স্পর্শ নাই । আবার দুইজনের মধ্যে আবির্ভাবের যেমন, তেমনই তিরোধানেরও একটা বিভিন্নত আছে—তারাপদ তাহার সমস্ত স্নেহবন্ধন ছিন্ন করিয়া, তাহাকে বশীকরণের সমস্ত আয়োজন পায়ে ঠেলিয়া দিয়া, উদাস অনাসক্ত প্রকৃতিমাতার বক্ষে লুকাইয়াছে ; নীলকণ্ঠ সকলের বিরাগ লইয়া ও একের ক্ষুব্ধ স্নেহমাত্র সম্বল করিয়া নিতান্তু অনাদৃতভাবে পরিভাক্ত হইয়াছে । তারাপদ যে প্রকৃতির সহিত একাত্ম, নীলকণ্ঠ তাহার প্রসাদের কণামাত্র পাইয়াছে। নীলকণ্ঠের চরিঞ্জের প্রধান বিশেষত্ব স্নেহের মায়াদগুস্পর্শে তাহার স্বপ্ত পুরুষোচিত আত্মসন্মানবোধের উদ্বোধন। লেখক অতি নিপুণতার সহিত তাহার এই গুঢ় পরিবর্তনের ইতিহাস বিবৃত করিয়াছেন। ‘সমাপ্তি’ গল্পে মুগ্ময়ীর ন্যায় নীলকণ্ঠও অতি অল্পকালের মধ্যে ভালবাসার স্পর্শে আত্মবিস্তুত বাল্যকাল হইতে পরিণত যৌবনে অবতীর্ণ হইয়াছে। ভালবাসার প্রভাবে এই মানসিক গৃঢ় পরিবর্তন রবীন্দ্রনাথের মনস্তত্ববিশ্লেষণে মৌলিকতার পরিচয় দেয় এবং ইহা আমাদের সামাঞ্জিক অবস্থার সহিত বেশ সহজভাবেই মিলিয়াছে। (৪) এইবার চতুর্থ পৰ্য্যায়ের গল্পগুলি আলোচনা করিব । সাধারণ বাঙালী জীবনের সহিত অতিপ্রাক্লতের ংযোগসাধন এক দিক দিয়া বিশেষ সহজ, অপর দিকে বিশেষ আয়াসসাধ্য। সহজ এইজন্য যে, আমাদের মধ্যে এপনও কতকগুলি বিশ্বাস ও সংস্কার সজীবভাবে বৰ্ত্তমান আছে, যাহাদের অতিপ্রাকৃতের প্রতি একটা স্বাভাবিক প্রবণতা আছে । আবার অন্য দিকে, আমাদের সাধারণ জীবন এতই বিশেষত্বহীন ও ঘটনা-বিরল, যে ইহার মধ্যে মনোবিজ্ঞানসম্মত উপায়ের দ্বারা অতিপ্রাকৃতের অবতারণা নিতান্ত দুরূহ। রবীন্দ্রনাথের গল্পমধ্যে উভয়বিধ গল্পেরই উদাহরণ মিলে। ‘সম্পত্তিসমর্পণ", "গুপ্তধন প্রভূতি কয়েকটি গল্প আমাদের সহজ ভৌতিক বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত-সেগুলিতে রবীন্দ্রনাথের বিশেষ কলাকুশলতার পরিচয় নাই । দ্বিতীয় শ্রেণীর গল্পের যে প্রতিবন্ধক তাহা তিনি আশ্চৰ্য্য কল্পনা-সমৃদ্ধির সঙ্গায়তায় অতিক্রম করিয়াছেন। ‘নিশীথে, ক্ষুধিত পাষাণ ও ‘মণি-হারা" এই শ্রেণীর অন্তভুক্ত। প্রকৃত, বাস্তব জীবনের সহিত অতিপ্রাকৃতের সমন্বয়