পাতা:মায়াবাঁশী - রবীন্দ্রনাথ মিত্র.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মায়াবাঁশী
২৬

এসে ফল কয়টি দুজনকে ভাগ করে দিল। দুজনে খেতে খেতে বুড়োর জীবনের কাহিনী শুনতে লাগলেন। বুড়োর চার ছেলে চার মেয়ে। স্ত্রী অনেক দিন মারা গেছে। ছেলে চারটি জাহাজে চাকুরী করে; অল্প-স্বল্প মাইনে পায়। মেয়ে কয়টি বড় লক্ষ্মী, শ্বশুরবাড়ী আছে। জামাইদের ভাল রকম যৌতুক দিতে পারেনি ব’লে, তারা মেয়েদের ছেড়ে দেয় না। সেই দুঃখেই বুড়ো মরার মত হয়ে আছে। সাধু সব কথা শুনলেন। নিজে একটি কথাও বললেন না। আহার শেষ হলে বুড়ো কোথা থেকে এক ঝুড়ি শুকনো পাতা নিয়ে এসে ঘরের মেঝেতে বিছিয়ে দিল। তার উপরে নিজের গায়ের ছেঁড়া কম্বলখানি বিছিয়ে শীতে হি হি ক’রে কাঁপতে লাগলো। জডিগ বাধা দিতে যাচ্ছিল, সাধু ইঙ্গিতে তাকে নিষেধ করলেন। বুড়ো তখন বললে, “আপনারা এখন বিশ্রাম করুন, কেউ এখানে বিরক্ত করবে না। সকালে এসে আমি ডেকে ঘুম থেকে তুলব।”

 শেষ রাত্রে সাধুর ডাকে জডিগের ঘুম ভেঙ্গে গেল। সাধু বলছেন, “তোলো তোমার তল্পী-তল্পা, বেরোও।”

 “বুড়োর সঙ্গে দেখা না করে?” “ফিরবার পথে দেখা কোরো। তখন অনেক কথা বলতে পারবে, চল।” এই ব’লে জডিগের হাত ধ’রে ঠেলে পথে নিয়ে এলেন।