পাতা:মায়াবাঁশী - রবীন্দ্রনাথ মিত্র.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মায়াবাঁশী
৩৭

বেটার আস্পর্দ্ধা ত কম নয়! এও দেখছি আমাকে গ্রাহ্য করে না। সূর্য্য না হয়ে যদি মেঘ হতাম—” যেই বলা অমনি কুলী দেখলে যে শরীরটা অনেকখানি হালকা হয়ে গেছে। চোখ মেলে দেখলে যে আকাশের মাঝখানে প্রকাণ্ড একখানা মেঘ হয়ে সে দাঁড়িয়ে আছে। “আচ্ছা রোসো, এইবার দেখছি কোন্‌ বেটা মেঘ আমার সঙ্গে টক্কর দেয়, এমন জলই ঢালব—” বলেই কুলী বৃষ্টি আরম্ভ করল। সাতদিন সাতরাত বৃষ্টি আর থামে না, রাস্তা ভেসে নদী হল। খাল বিল ভরে গেল। সমুদ্র ছেপে উঠে দেশ ভাসিয়ে দিল। জীব-জন্তু সব জলে ভাসতে লাগল। দেশে হাহাকার উঠল। শস্য নষ্ট হল। দেশে দুর্ভিক্ষ হল। রাজরাজড়া ভিখারী হলেন। তবুও বৃষ্টি থামে না। এমন সময় কুলী দেখলে যে এত বৃষ্টিতেও একটা পাহাড় কিছুতে গলছে না। বড় বড় গাছপালা ভেসে গেল, দালান-কোঠা খসে পড়ল। কিন্তু পাহাড় সেই যে চুপচাপ বসে রয়েছে—যেন পৃথিবীতে কিছুই হচ্ছেনা। তখন কুলীর বড় অপমান বোধ হল। সে বলে উঠল, “হায়রে! এত করেও পৃথিবীর সমস্ত জিনিষগুলো একসঙ্গে জব্দ করতে পারলাম না। যদি পাহাড় হতাম! দেবদূত দূরে দাঁড়িয়েছিলেন, হেসে বললেন, “তথাস্তু!” কুলী একেবারে আকাশ থেকে ঝুপ করে একটা