পাতা:বিশ্বকোষ দশম খণ্ড.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারদ করিতে করিতে পৃথিবী পর্যটন আরম্ভ করিলাম এবং মৎসরপৃষ্ঠ হইয়া কাল প্রতীক্ষা করিতে লাগিলাম। 'পরে ফুযোগ্য সময়ে হঠাৎ আমার মৃত্যু আসিয়া উপস্থিত ইইল । অনস্তুর ভগবান পূৰ্ব্বপ্রতিশ্রুত বিশুদ্ধ সত্ত্বরূপ পাশ্বদশরীর আমাতে সংযোগ করিলে, অরিন্ধ কৰ্ম্ম সকলের ভোগ শেষ হওয়ায়, আমার পাঞ্চভৌতিক দেহ পতিত হইল । যখন ভগবান কল্পাবসানে এই বিশ্ব সংহার করিয়া সমুদ্রজলে শয়ন করেন, তখন আমি তাহার নিশ্বাসযোগে তাহার অস্তরে প্রবিষ্ট হইয়াছিলাম। যুগ সহস্ত্রের পর যখন প্রলয়াবসান হয়, তখন ভগবানু নিত্রী হইতে উধিত হইয়া পুনৰ্ব্বার স্মৃষ্টি করিতে ইচ্ছা করিলেন, তখন তাহার ইঞ্জিয় হইতে মরীচি অত্রি প্রভৃতি ঋষিগণ জন্মগ্রহণ করেন, আমিও তথন উৎপন্ন হইলাম। আমি তদবধি অখণ্ডিত ব্ৰহ্মচৰ্য্যব্রতধারণ করিয়া বিষ্ণুর প্রসাদে ত্রিলোকীর অন্তর ও বাহে পৰ্যটন করি । কোন স্থানেই আমার গতির ব্যাঘাত নাই। স্বয়-ব্রহ্মে বিভূষিত দেবদত্ত এই বীণার মূৰ্চ্চনাপূৰ্ণক হরিকথা গান করিতে করিতে সৰ্ব্বত্র গমন করিয়া থাকি। যখন আমি হরিগুণগান করিতে থাকি, তখন তিনি আমার হৃদয়ে বিরাজিত থাকেন । ( ভাগবত ১১৬ অ” ) ব্ৰহ্মবৈবর্তের মতে, নারদ ব্ৰহ্মার মানসপুত্র। ইনি ব্রহ্মার কণ্ঠদেশ হইতে উৎপন্ন হন । ব্ৰহ্ম ইহাকে এবং ইহার ভ্রাতৃগণকে স্মৃষ্টিকার্যের ভারাপণ করেন । কিন্তু নারদ তাঁহাতে ঈশ্বরচিন্তার অসুবিধা হইবে ভাবিয়া এই কাৰ্য্যে স্বীকৃত হইলেন না। সেই জন্য ব্ৰহ্মা ক্রুদ্ধ হইয়া নারদকে শাপ দেন। নারদ পিতৃশাপে গন্ধমাদনপৰ্ব্বতে গন্ধৰ্ব্বযোনিতে জন্মগ্রহণ করিয়া উপবর্হণ নামে বিখ্যাত হন । সেই জন্মে ইনি গন্ধৰ্ব্বরাজ চিত্ররথের ৫০টা ক্যাকে বিবাহ করেন । এই ৫০ট কন্সার মধ্যে মালাবতী প্রধান । একদা ইনি ব্ৰহ্মার সভায় রস্তার মৃত্য দেখিতে দেখিতে এতদূর কামমোহিত হন, যে তাঁহাতে ইহার রেতঃ স্থলিত হয় । তাহাতে ব্ৰহ্মার শাপে গন্ধৰ্ব্বদেহ ত্যাগ করিয়া নরলোকে জন্মগ্রহণ করেন। এক সময় কান্তকুজদেশে ক্রমিল নামে একজন গোপরাজ বাস করিতেন।. তাহার পত্নী স্বামিদোষে বন্ধ হন। দ্রমিল ইহা জানিতে পারিয়া, তাহাকে ব্ৰহ্মবীৰ্যো পুত্রোৎপাদনের অনুমতি দান করেন। তদনুসারে কলাবতী ঋতুস্ৰাতা হইয়া কাপ্তপ নারদের নিকট উপস্থিত হইয়া সন্তান ভিক্ষা করেন। মুনিবয় তাহার কথায় রাগাম্বিত হইয়া গমন করিতে উষ্ঠত হইলেন, এমন সময় মেনকা সেইস্থান দিয়া গমন করিতে ছিল, অনন্তর তাঁহার উরুস্থল দেখিতে পাইয়া মুনিবরের রেতঃ ঋলিত হইল। কলাবতী ঋতুরাতা ছিল, তৎক্ষণাৎ আসিয়া সেই বীৰ্য্যভক্ষণ করিয়া গৃহে গমন করিল। ইহার [ లిe j নারদ - - বীৰ্য্যযোগে কলাবতীর গর্ভে গন্ধৰ্ব্ব উপবহণ মনুষ্য হুইয়া জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালে দেশে অনাবৃষ্টি হওয়াতে ইহার নাম নারদ হইল । এই বালক অন্ত বালকদিগকে জ্ঞান দান করিত এবং জাতিন্মর ও মহাজ্ঞানী এই জন্ত ইহার নাম নারদ হইয়াছিল । কাপ্তাপনারদের বীৰ্য্যে ইনি উৎপন্ন হন, অতএব ইনিও মুনিদিগের বরে নারদ এই নামে প্রসিদ্ধ হইয়াছিলেন । "অনাবৃষ্টাবশেষে চ কালে বালো বভূব ছ। নারং দদৌ জন্মকালে তেনায়ং নারদাভিধঃ ॥ দদাতি নারং জ্ঞানঞ্চ বালকেভ্যশ্চ বালকঃ । জাতিস্মরো মহাজ্ঞানী তেনায়ং নারদাভিধঃ ॥" (ব্রহ্মবৈ” ব্ৰহ্মথ” ২১ অ’ । ) বিপ্রগণ ইহাকে ব্ৰহ্মপুত্র জানিতে পারিয়া বিষ্ণুমন্ত্রে দীক্ষিত করেন। এই মহাজ্ঞানী শিশু গঙ্গাতীরে স্বান করিয়া বিষ্ণুমন্ত্র জপ করিতে লাগিলেন । এই মন্ত্র জপ করিতে করিতে ধ্যানে বিষ্ণুর দ্বিভূজ মুরলীহস্ত ও চন্দনচচ্চিত মূৰ্ত্তি দেখিতে পাইলেন। এই মূৰ্ত্তি দর্শন করিয়া নারদ নিতান্ত প্রীত হইলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে এই মূৰ্ত্তি তিরোহিত হইল, তখন ইনি শোকে আকুল হইলেন। এই সময় দৈববানী হইল, যখন এই নশ্বরদেহ নষ্ট হইবে, তখন তুমি আমায় পাইবে। যথাকালে তীর্যস্থলে হৃদয়ে বিষ্ণুকে স্মরণ করিতে করিতে নারদ তনুত্যাগ করেন। দেহাবসানে নারদের শাপবিমোচন হইল । তখন তিনি পুনরায় ব্রহ্মবিগ্রহে লীন হইলেন। পরে কতিপয় কল্প অতীত হইলে ব্ৰহ্ম যখন পুনরায় সকল স্থষ্টি করেন, তখন ব্রহ্মার কণ্ঠদেশ হইতে নারদ উৎপন্ন হন । ( ব্রহ্মবৈবর্তপু ব্রহ্মখ” ২১২২ অ” ) বরাহপুরাণে লিখিত আছে, ইনি পূর্বে সারস্বত নামে এক ব্রাহ্মণ ছিলেন, তপোপ্রভাবে কল্লান্তরে আবার ব্রহ্মার পুত্র হন । ইনি ভগবানের তৃতীয় অবতার। ইহার মস্তকে জটাভার, পরিধান স্বর্গটার, করে হেমদও, কমণ্ডলু ও অতি বিচিত্র কচ্ছপ বাণী। মহাভারতের শল্যপর্কে লিখিত আছে,—ইনি প্রথমতঃ ব্ৰহ্মার নিকট কথঞ্চিৎ সঙ্গীত শিক্ষা করেন । ইনি দক্ষের সহস্র পুত্রকে সাংখ্যযোগ উপদেশ দিয়া সংসারত্যাগী করাইয়াছিলেন । নারদ ইস্ত্রের নিকট এক সুৰ্য্য স্তব শিক্ষা করিয়া ধৌম্যকে শিক্ষা দিয়াছিলেন। যুধিষ্ঠির এই স্তব ধৌম্যের নিকট লাভ করেন । কোন সময়ে নারদ শ্বেতদ্বীপে গমন করিয়া বিষ্ণুর নিকট মায়ার স্বরূপ অবগত হইবার জন্য আগ্রছ প্রকাশ করিলেন। বিষ্ণু ইহাকে সঙ্গে লইয়া বৃদ্ধ ব্রাহ্মণবেশে বেত্রবতী নদীর তীরস্থ হুৈদল-নায়ক নগরে গমন করিলেন। ঐ মগরে বীরভদ্র নামে এক ধনী বৈঙ্গ ছিল । উভয়ে তাহারই গৃহে