পাতা:বিশ্বকোষ দশম খণ্ড.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারিকেল , নারিকেল -- ৩। উপরে কর্দম ও তাহার নীচে বালুক । ৪। কর্দম ও বালুকামিশ্ৰিত জমিতে পাথরের লুড়ি থাকিলে । ৫ । যেখানে পখাদি সৰ্ব্বদা প্রস্রাব করে ইত্যাদি। (কিন্তু বোম্বাই প্রেসিডেন্সীর অন্তর্গত কাঠিয়াবাড় প্রদেশের গোপনাথ নামক স্থানে যে নারিকেল বৃক্ষ জন্মে, উহা সাধারণতঃ পাহাড়েই হুইয়া থাকে । ) মহিমুরে ৪ জাতীয় নারিকেল বৃক্ষ হয় । ১ । লোহিতবর্ণবিশিষ্ট । ২ । লোহিত ও সবুজমিশ্রিত। ৩ । ফ্যাকাসে সবুজ বর্ণের। ৪। গাঢ় সবুজ বর্ণের। ইহার মধ্যে লোহিত বর্ণের নারিকেলগুলি অতি সুস্বাদু বলিয়া খ্যাত । বোম্বাই প্রদেশের অনেক স্থলে নারিকেল হইতে মদ প্রস্তুত । করে। এইজন্য এখানে অল্পায়াসে নারিকেল প্রস্তুত হয় । i মাম্রাজ, মুহিস্থর ও বোম্বাই প্রভৃতি স্থানেও নারিকেলের বহুল অাদর দেখা যায়। বঙ্গদেশে খর্জুর বৃক্ষ হইতে মদ প্রস্তুত হয়, নারিকেল হইতে হয় না, বোধ হয় সেইজন্যই এখানে যত্ন । পূৰ্ব্বক প্রায় কেহই নারিকেলের চাষ করে না। নওয়াখালি, বাখরগঞ্জ, যশোর ও ২৪ পরগণায় যথেষ্ট নারিকেল জন্মে । সিংহলে ৫ প্রকার নারিকেল জন্মে । ১। টেছিল--ইহায় বর্ণ কমলানেবুর স্থায় এবং আকৃতি । বাদামের মত চেপ্টা । | ২ । টেথিলী অপেক্ষ ইহার অ্যকার অপেক্ষাকৃত গোল । ৩ । ইহার আকার হৃৎপিণ্ডের আকৃতির দ্যায় ও বর্ণ পীতাভ । ছোবড়া ফেলিয়া দিলে ইছার মধ্যবৰ্ত্ত নারিকেলের মালা লালবর্ণ দেখা যায় । | ৪ । সাধারণতঃ সৰ্ব্বত্র বাজার হাটে যে প্রকার নারি- | কেল বিক্রয় হয় । ৫ । রাজহংস ডিম্বের দ্যায় ছোট নারিকেল। এই নারিকেল অতি অল্প জন্মে, কিন্তু অতি সুস্বাস্তু । নারিকেল গাছের অনেক শত্র আছে । জমি যদি অত্যন্ত উর্বর হয়, তবে সেষ্ট জমিতে একপ্রকার কীট জন্মে। উহার মস্তক ঈষৎ লোহিতেয় আভাযুক্ত ধুসরবর্ণ। উহার গাছের পুকড় দিয়া প্রবেশ করে ও গুড়ি ভেদ করিয়া বাহির হয়। অবশেষে গাছ মরিয়া যায়। স্থানবিশেষে এই কীটের আবার প্রকার ভেদ দৃষ্ট হর। ইহাদের হস্ত হইতে রক্ষা পাইবার প্রধান | ঔষধ লবণ। বুক্ষের মস্তকে কিয়ৎপরিমাণে লবণ প্রক্ষেপ করিলে, | | | | [ & 3 J ক্রমশঃ পত্রের গোড়া দিয়া ঐ লবণ বা লবণাক্ত জল বৃক্ষের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। কিঞ্চিৎ অধিক পরিমাণে লবণ ভিতরে প্রবেশ করিলেই কীট বাহির হইয়া যায় অথবা মরিয়া যায়। স্থানে স্থানে এই বৃক্ষের কাগু ও নারিকেল দিরা একপ্রকার নির্যাস বা আটা বাহির হয়। উহা দেখিতে ਬੁਝ ঈষৎ লাল আভাযুক্ত । নারিকেলত্বক্ বা ছোবড় এবং পত্রের ডাটার গোড়ার অংশ দ্বারা রং প্রস্তুত হয়। উহাদ্বারা কাপড় ছোপান বা রং रुग्नां शांभ्रं । নারিকেল হইতে যে দুগ্ধ প্রস্তুত হয়, উহা চুণ বা অন্য রঙ্গের সহিত মিশ্রিত করিয়া দেওয়াল রং করিলে দেওয়ালের চাকৃচিক্য বৰ্দ্ধিত ও রং দীর্ঘস্থায়ী হয় । নারিকেলের ছোবড় স্বারা দড়ি, কাছি, গদি, ঘোড়ার সাঙ্গ ইত্যাদি প্রস্তুত হয় । সৰ্ব্বাপেক্ষ কোচীন, মাক্রাজ, লাক্ষাদ্বীপ, মলবার, সিংহল, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি স্থানের নারিকেলের ছোবড়া উৎকৃষ্ট । ইছার মধ্যে আবার কোচীনের ছোবড় সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট । ছোবড়ার আঁশ ভাল হইলে দড়িও ভাল হয় । উৎকৃষ্ট দড়ি প্রস্তুত করিতে হইলে, যে নারিকেল গাছে এক বৎসর হইয়াছে ঐ নারিকেল সংগ্ৰহ করিয়া, উহার ছোবড়া স্থানভেদে ৬ মাস হইতে ১৮ মাস পর্যন্ত ভিজাইয়া রাথিয় তাহ মুগের দ্বারা পিটিয়া ও আঁচড়াইয়া আঁশ প্রস্তুত করিতে হয়। ঐ আঁশের দড়ি প্রভৃতি দেখিতে অতি সুন্দর ও প্রায় শুভ্রবর্ণবিশিষ্ট । লাক্ষাদ্বীপ প্রভৃতি স্থানে উক্ত নিয়মে নারিকেলের ছোবড়ার আঁশ প্রস্তুত করে। কিন্তু আবার কেহ কেহ বলেন যে নারিকেলের ছোবড়ার দড়ি পূর্বোক্ত প্রক্রিয়া দ্বারা শুভ্রতর করিবীর চেষ্টা করিলে, উহার প্রকৃত গুণের অর্থাৎ কাঠিন্য বা দীর্ঘস্থায়িত্বশক্তির হ্রাস হয় । মলবার উপকূল প্রভৃতি ষে সমস্ত স্থানে মদ প্রস্তুত জন্ম নারিকেলের গারে ছিদ্র করিয়া দেয়, সে সমস্ত নারিকেলের ছোবড় উৎকৃষ্ট ও শক্ত হয় না । ভারতবর্ষের মধ্যে মাঞ্জ{ঞ্জ প্রেসিডেন্সিতেই অধিক পরিমাণে নারিকেলের দড়ি বা কাতা প্রস্তুত হয়। ১৬শ শতাব্দীর মধ্যভাগে যুরোপে প্রথম কাতার আমদানী হইয়াছিল। নারিকেলের পত্রদ্বারা মাছুর, পরদা এবং ঝুড়ি প্রস্তুত হয় । প্রতি পত্রের মধ্যস্থলে যে সূক্ষ্ম শলাকা থাকে, তন্দ্বারা সম্মার্ক্সী প্রস্তুত হইয়া থাকে। কোন কোন দ্বীপবাসীরা এষ্ট পয়দার ছোট নৌকার পাইল নিৰ্ম্মাণ করে। অনেক স্থানে এই পত্রস্বারা ঘর ছাইয়া থাকে। শুষ্ক পত্র জ্বালানী কাষ্ঠস্বরূপ বাৰ হৃত হয় ।