পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छ्ञ ৩১৭ চালাই— প্রবন্ধেলেখক এই অপবাদ দিয়েছেন । অভিযোগকারীর বোঝা উচিত, এটা একেবারেই অসম্ভব, কেননা ছন্দের কাজ চোখ-ভোলানো নয়, কানকে খুশি করা— সেই কানের জিনিসে ইঞ্চি-গজের মাপ চলেই না । বৎসর প্রভৃতি শব্দ গেব্ৰিজামার মতে , মধুপুরের স্বাস্থ্যকর হাওয়ায় দেহ এক-আধ ইঞ্চি বাড়লেও চলে, আবার শহরে এসে এক-আধ ইঞ্চি কমলেও সহজে খাপ খেয়ে যায়। কান যদি সন্মতি না দিত তা হলে কোনো কবির সাধ্য ছিল না ছন্দ নিয়ে যা খুশি তাই করতে পারে। বৎসরে বৎসরে হাকে কালের গোমায়ু— যায় আয়ু, যায় আয়ু, যায় যায় আয়ু । এখানে বৎসর তিন মাত্রা । কিন্তু সেতারে মাড় লাগাবার মতে অল্প একটু টানলে বেস্থর লাগে না । যথা— সখী-সনে উৎসবে বৎসর যায় শেষে মরি বিরহের ক্ষুৎপিপাসায়। ফাগুনের দিনশেষে মউমাছি ও যে মধুহীন বনে বৃথা মাধবীরে খোজে। টান কমিয়ে দেওয়া যাক— উৎসবের রাত্রিশেষে মুখপ্রদীপ হায়, তারকার মৈত্রী ছেড়ে মুত্তিকারে চায় । দেখা যাচ্ছে, এটুকু কমিবেশিতে মামলা চলে না, বাংলাভাষার স্বভাবের মধ্যেই যথেষ্ট প্রশ্রয় অাছে। যদি লেখা যেত সখাসনে মহোৎসবে বৎসর যায় তা হলে নিয়ম বঁাচত, কারণ পূর্ববর্তী ওকারের সঙ্গে খণ্ড ২ মিলে এক মাত্রা ; কিন্তু কর্ণধার বলছে ওইখানটায় তরণী যেন একটু কাত হয়ে পড়ল । আমি এক জায়গায় লিখেছি ‘উদয়-দিকৃপ্রাস্ত-তলে’ । ওটাকে বদলে উদ্বয়ের দিকৃপ্রাস্ত-তলে’ লিখলে কানে খারাপ শোনাত না এ কথা প্রবন্ধলেখক বলেছেন, সালিসির জন্তে কবিদের উপর বরাত দিলুম। অপর পক্ষে দেখা যাক, চোখ ভুলিয়ে ছন্দের দাবিতে ফাকি চালানো যায় কি না । এখনই আসিলাম দ্বারে, আমনই ফিরে চলিলাম । চোখও দেখে নি কন্তু তারে, কানই শুনিল তার নাম । ՀՖլՀՀ