পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপতী ՖԵ-ծ স্বমিত্রা । শংকর ! * শংকর। কী দিদি । কী দেবি । এই যে আমি এসেছি। যেদিন ওরা তোমাকে কেড়ে নিয়ে গেল সেদিন মরার বেশি দুঃখ পেয়েছি ; শেষকালে কাশ্মীরের কন্যাকে কাশ্মীরের দেবতা স্বয়ং উদ্ধার করে আনলেন এই দেখে আমার জন্ম সার্থক হল । স্থমিত্রা। তুমি আমার দূত হয়ে যাও মহারাজ বিক্রমের কাছে। শংকর। এখনই যাব। বলে কী জানাতে হবে । নরেশ । দেবী, শংকরকে নয়, আমাকে পাঠিয়ে দাও, রাজা যদি অপমান করে বৃদ্ধ সইতে পারবে না। স্বমিত্রা । না রাজকুমার, এই আমার শেষ আমন্ত্রণ— আমার চিরবন্ধু ছাড়া কার হাত দিয়ে পাঠাব। শংকর, শিশুকালে তোমার কোলে একদিন আমাকে গ্রহণ করেছ। মৃত্যুর সময় পিতা তার শেষ অভিবাদন দিয়েছিলেন তোমাকেই। আজ 'সেই তোমার স্বমিত্রার বাণী নিয়ে তোমাকেই যেতে হবে, হয়তো অপমানের মুখে । শাস্ত হয়ে সহিষ্ণু হয়ে বোলো মহারাজকে, তার সঙ্গে সম্বন্ধের চরম পরিণামের জন্তে মন্দিরে দেবতার চরণপ্রাস্তে স্বমিত্রা অপেক্ষা করবে। আর তোমার পরম স্নেহের ধন কুমার, ওই কুমারের জন্য ভেবো না ; তিনি মৃত্যুকে ভয় করেন না । সেই বন্ধু, সেই বিশ্ববিচারক ধর্মরাজ রইলেন তার সহায় । শংকর। দিদি, বৃদ্ধের একটি কথা শোনো, জানি কুমারের সৈন্তসামন্ত নেই, জানি চন্দ্রলেন ওঁর বিরুদ্ধে, তবু ষে-কয়জন আমরা আছি ওঁর সহচর, তাদের নিয়ে ওঁকে যুদ্ধক্ষেত্রেই যেতে হবে । সেখানে তার জন্মভূমি তাকে পুণ্যক্রোড়ে গ্রহণ করবেন। দেবদত্ত । দেশের দুঃখ তাতে আরো আলোড়িত হয়ে উঠবে, শংকর। উন্মত্তের মত্ততাগ্নিতে আর ইন্ধন দিয়ো না । কুমারলেন। শংকর, যাও তুমি, মহারাজকে ডেকে নিয়ে এলোগে। অতিথি তিনি, অতিথির মতো তাকে সৎকৃত করব । শংকর। হে রুদ্র, হে হিরণ্যপাণি, আজ তোমার জ্যোতিতে আবরণ কেন । তোমার সেবকদের লজ নিবারণ করে। দীপ্যমান তেজে এসে বাহির হয়ে— তোমার অগ্নিকেতু উদঘাটিত করে দাও । নমস্কার তোমাকে, নমস্কার তোমাকে, বারবার তোমাকে নমস্কার । If ভার্গবের প্রবেশ ভার্গব । মহারাজ বিক্রম অনতিদূরে, এই শুনি জনশ্রুতি । আদেশ করে, সমস্ত দ্বার রুদ্ধ করে দিই।