পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী বেজেছে ছুটির গান ; ভাটার নদীর ঢেউগুলি মুক্তির কল্লোলে মাতে, নৃত্যবেগে উধেব বাহু তুলি’ উচ্ছলিয়া বলে, “চলে, চলো।” বাউল উত্তরে-হাওয়! ধেয়েছে দক্ষিণ মুখে, মরণের রুদ্রনেশা-পা ওয়া ; বাজায় অশাস্ত ছন্দে তাল পল্লবের করতাল, ফুকারে বৈরাগ্যমন্ত্র ; স্পশে তার হয়েছে মাতাল প্রাস্তরের প্রাস্তে প্রান্তে কাশের মঞ্জরী, কঁপে তারা ভয়কুণ্ঠ উংকষ্ঠিত স্বখে—বলে, “বৃস্তবন্ধহারা যাব উদামের পথে, যাব আনন্দিত সর্বনাশে, রিক্তবৃষ্টি মেঘ সাথে, স্থষ্টিছাড়া ঝড়ের বাতাসে, যাব, যেথা শংকরের টলমল চরণ পাতনে জাহ্নবীতরঙ্গমন্দ্র-মুখরিত তা গুব-মাতনে গেছে উড়ে জটাভ্রষ্ট ধুতুরার ছিন্নভিন্ন দল, কক্ষচু্যত ধূমকেতু লক্ষ্যহারা প্রলয়-উজ্জল আত্মঘাত-মদমত্ত আপনারে দীর্ণ কীর্ণ করে নির্মম উল্লাসবেগে, খ ও খণ্ড উল্কাপিণ্ড ঝরে, কণ্টকিয়া তোলে ছায়াপথ ।* ওরা ডেকে বলে, “কবি, সে তীর্থে কি তুমি সঙ্গে যাবে, যেথা অস্তগামী রবি সন্ধ্যামেঘে রচে বেদী নক্ষত্রের বন্দনাসভায়, যেথা তার সর্বশেষ রশ্মিটির রক্তিম জবায় সাজায় অস্তিম অর্ঘ্য ; ষেথায় নিঃশব্দ বেণু পরে সংগীত স্তম্ভিত থাকে মরণের নিস্তব্ধ অধরে ।” কবি বলে, “যাত্ৰী আমি, চলিব রাত্রির নিমন্ত্রণে যেখানে সে চিরস্তন দেয়ালির উংসব প্রাঙ্গণে মৃতু্যদূত নিয়ে গেছে আমার আনন্দদীপগুলি, যেথা মোর জীবনের প্রত্যুষের স্থগন্ধি শিউলি মাল্য হয়ে গাথা আছে আনস্তের অঙ্গদে কুণ্ডলে, ইন্দ্রাণীর স্বয়ম্বর-বরমাল্য সাথে ; দলে দলে