পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38b- রবীন্দ্র-রচনাবলী পরিচয় বিশেষভাবে সম্পূর্ণ হয় না। আমার সাধারণ পরিচয়, আমি ভারতীয় ; বিশেষ পরিচয়, আমি বাঙালি ; আরো বিশেষ পরিচয়, আমি বিশেষ পরিবারের বিশেষ নামধারী মানুষ । নয় মাত্রার পদবিশিষ্ট ছন্দ সাধারণভাবে অনেক হতে পারে। আরো বিশেষ পরিচয় দাবি করলে, এর কলাসংখ্যা এবং সেই কলার মাত্রাসংখ্যার হিসাব দিতে হয় । কোনো কোনো ছন্দে কলাবিভাগ করতে ভুল হবার আশঙ্কা আছে। যেমন— গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা। পয়ারের ১৪ মাত্রা থেকে এক মাত্রা হরণ করে এই ১৩ মাত্রার ছন্দ গঠিত । অর্থাৎ "গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরিষণ এবং এই ছন্দটি বস্তুত এক, এমন মনে হতে পারে। আমি তা স্বীকার করি নে ; তার সাক্ষী শুধু কান নয়, তালও বটে। এই দুটি ছন্দে তালের ঘা পড়েছে কী রকম তা দেখা উচিত। > २ গগনে গরজে মেঘ | ঘন বরিষণ । সাধারণ পয়ারের নিয়মে এতে দুটি আঘাত । > ૨ \లి + গগনে গরজে মেঘ | ঘন বর। ষা । এতে তিনটি আঘাত | পদটি তিন অসমান ভাগে বিভক্ত। পদের শেষবৰ্ণে স্বতন্ত্র বেণক দিলে তবেই এর ভঙ্গিটাকে রক্ষণ করা হয় । বরষা’ শব্দের শেষ আকার যদি হরণ করা যায় তা হলে বেণক দেবার জায়গা পাওয়া যায় না, তা হলে অক্ষরসংখ্যা সমান হলেও ছন্দ কৰ্ণত হয়ে পড়ে । у “আধার রজনী পোহালো’ পদের অন্তবর্ণে দীর্ঘস্বর আছে, কিন্তু নয় মাত্রার ছন্দের পক্ষে সেটা অনিবার্য নয়। তারই একটি প্রমাণ নীচে দেওয়া গেল । জেলেছে পথের আলোক সূর্যরথের চালক, অরুণরক্ত গগন । বক্ষে নাচিছে রুধির, কে রবে শাস্ত স্বধীর কে রবে তজীমগন । সাগর-উৰ্মি বিলোল, এল মহেক্সলগন, কে রবে তন্ত্রণমগন ।