পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ह्मण 8›ዓ ইংরেজি শব্দে না দিয়ে কিম্বা সংস্কৃত কাব্যে দীর্ঘত্বস্বকে বাংলার মতো সমভূম করে যদি রচনা করা যায় তবে কেবলমাত্র ছন্দকৌশলের খাতিরে সাহিত্যসমাজে তার নতুন মেলবন্ধন করা চলবে না। বিশেষত, চিহ্ন উচিয়ে চোখে খোচা দিয়ে পড়াতে চেষ্টা করলে পাঠকদের প্রতি অসৌজন্ত করা হয় । | | | Autumn flaunteth in his bushy bowers এতে একটা ছন্দের স্বচনা থাকতে পারে, কিন্তু সেইটেই কি যথেষ্ট। অথবা— | | | | সম্মুখ সমরে পড়ি বীর চূড়ামণি বীরবাহু । একৃসেণ্ট-এর তাড়ায় ধাক্কা মেরে চালালে এইরকম লাইনের আলস্য ভেঙে দেওয়া যায় যদি মানি, তবু আর কিছু মানবার নেই কি । ৬ জুলাই ১৯৩৬ দীর্থহ্রস্ব ছন্দ সম্বন্ধে আর-একবার বলি। ও এক বিশেষ ধরনের লেখায় বিশেষ ভাষারীতিতেই চলতে পারে। আকবর বাদশার যোধপুরী মহিষীর জন্তে তিনি মহল বানিয়েছিলেন স্বতন্ত্র, সমগ্র প্রাসাদের মধ্যে সে আপন জাত বঁচিয়ে নির্লিপ্ত ছিল। বাংলার উচ্চারণরীতিকে মেনে চলে যে ছন্দ তার চলাফেরা সাহিত্যের সর্বত্র, কোনো গণ্ডির মধ্যে নয়। তা পণ্ডিত-অপণ্ডিত সকল পাঠকের পক্ষেই স্বগম। তুমি বলতে পার, সকল কবিতাই সকলের পক্ষে স্বগম হবেই এমনতরো কবুলতিনামায় লেখককে সই দিতে বাধ্য করতে পারি নে। সে তর্ক খাটে ভাবের দিক থেকে, চিস্তার দিক থেকে, কিন্তু ভাষার সর্বজনীন উচ্চারণরীতির দিক থেকে নয়। তুমি বেলের শরবতই করে, দইয়ের শরবতই করো, মূল উপাদান জলট সাধারণ জল— ভাষার উচ্চারণটাও সেইরকম। My heart aches— কোনো ধ্বনিলৌষ্ঠবের খাতিরেই বা বাঙালির অভ্যাসের অনুরোধে heartএর আ এবং achesএর এ-কে হ্রস্ব করা চলবে না। এই কারণে বাংলায় বিশুদ্ধ সংস্কৃত ছন চালাতে গেলে দীর্ঘ স্বরধ্বনির জায়গায় যুক্তবর্ণের ধ্বনি দিতে হয় । সেটার জন্তে বাংলাভাষা ও পাঠককে সর্বদা ঠেলা মারতে হয় না। অথবা দীর্ঘস্বরকে দুই মাজার মূল্য দিলেও চলে। যদি লিখতে—