পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अ१२ রবীন্দ্র-রচনাবলী শরীর গদগদ করিতেছে। সে বলিতেছে আমার জন্ত যদি পাত পাড়া না হইয়া থাকে আমি নিমন্ত্রণপত্রের অপেক্ষা করিব না। আমি গায়ের জোরে যার পাই তার পাত কাড়িয়া লইব । একসময় ছিল যখন কাড়িয়া-কুড়িয়া লইবার বেলায় ধর্মের দোহাই পাড়িবার কোনো দরকার ছিল না। এখন তার দরকার হইয়াছে। জর্মনির নীতিপ্রচারক পণ্ডিতেরা বলিতেছেন, যারা দুর্বল, ধর্মের দোহাই তাদেরই দরকার ; যারা প্রবল, তাদের ধর্মের প্রয়োজন নাই, নিজের গায়ের জোরই যথেষ্ট । আজ ক্ষুধিত জৰ্মনির বুলি এই যে, প্রভু এবং দাস এই দুই জাতের মানুষ আছে। প্রভু সমস্ত আপনার জন্য লইবে, দাস সমস্তই প্রভুর জন্ত জোগাইবে— যার জোর আছে সে রথ হাকাইবে, যার জোর নাই সে পথ করিয়া দিবে। যুরোপের বাহিরে যখন এই নীতির প্রচার হয় তখন যুরোপ ইহার কটুত্ব বুঝিতে পারে নাই । আজ তাহ নিজের গায়ে বাজিতেছে । কিন্তু জর্মন-পণ্ডিত যে তত্ত্ব আজ প্রচার করিতেছে এবং যে তত্ত্ব আজ মদের মতে জর্মনিকে অন্তায় যুদ্ধে মাতাল করিয়া তুলিল সে তত্বের উৎপত্তি তো জর্মন-পণ্ডিতের মগজের মধ্যে নহে, বর্তমান যুরোপীয় সভ্যতার ইতিহাসের মধ্যে । \లిసి ) ছোটো ও বড়ো যে সময়ে দেশের লোক তৃষিত চাতকের মতো উৎকণ্ঠিত, যে সময়ে রাষ্ট্রীয় আবহাওয়ার পর্যবেক্ষকেরা খবর দিলেন যে, হোমরুলের প্রবল মৈসুম-হাওয়া আরবসমুদ্র পাড়ি দিয়াছে, মুষলধারে বৃষ্টি নামিল বলিয়া ; ঠিক সেই সময়েই মুষলধারে নামিল বেহার অঞ্চলে মুসলমানের প্রতি হিন্দুদের একটা হাঙ্গামা । অন্ত দেশেও সাম্প্রদায়িক ঈর্ষাম্বেষ লইয়া মাঝে মাঝে তুমুল দ্বন্দ্বের কথা শুনি । আমাদের দেশে যে বিরোধ বাধে সে ধৰ্ম লইয়া, যদিচ আমরা মুখে সর্বদাই বড়াই করিয়া থাকি যে, ধর্মবিষয়ে হিন্দুর উদারতার তুলনা জগতে কোথাও নাই। বর্তমানকালে পশ্চিম মহাদেশের উত্তরপশ্চিম অঞ্চলে যে বিরোধ বাধে তাহ অর্থ লইয়া । সেখানে খনির শ্রমিকেরা, সেখানে ডক ও রেলোয়ের কমিকের মাঝে মাঝে হুলস্থূল বাধাইয়া তোলে ; তাহ লইয়া আইন করিতে হয়, ফৌজ ডাকিতে হয়, আইন