পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छ्न्ल 80) কৃতজ্ঞ । তেমনি যথেষ্ট যতি মিশেল করা হয়েছে ছড়ার ছন্দে, শিশুকাল থেকে বাঙালি তাতে আনন্দ পায় । সে সহজেই আউড়েছে— কণক কালো, কোকিল কালো, কালো ফিঙের বেশ, তাহার অধিক কালো, কন্তে, তোমার চিকন কেশ । কিম্বা— টুমুল টুমুল বান্তি বাজে, লোকে বলে কী, শামুকরাজা বিয়ে করে ঝিনুকরাজার ঝি । > 38〉 গদ্যছন্দ গদ্য বলতে বুঝি যে ভাষা আলাপ করবার ভাষা ; ছন্দোবদ্ধ পদে বিভক্ত যে ভাষা তাই পদ্য । আর, রসাত্মক বাক্যকেই আলংকারিক পণ্ডিত কাব্য সংজ্ঞা দিয়েছেন। এই রসাত্মক বাক্য পদ্যে বললে সেটা হবে পদ্যকাব্য আর গদ্যে বললে হবে গদ্যকাব্য। গদ্যেও অকাব্য ও কুকাব্য হতে পারে, পষ্ঠেও তথৈবচ। গদ্যে তার সম্ভাবনা বেশি, কেননা ছন্দেরই একটা স্বকীয় রস আছে—সেই ছন্দকে ত্যাগ করে যে কাব্য, স্বন্দরী বিধবার মতো তার অলংকার তার আপন বাণীদেহেই, বাইরে নয়। এ কথা বলা বাহুল্য যে, গদ্যকাব্যেও একটা আবাধা ছন্দ আছে। আস্তরিক প্রবর্তনা থেকে কাব্য সেই ছন্দ চলতে চলতে আপনি উদ্ভাবিত করে, তার ভাগগুলি অসম হয় কিন্তু সবসুদ্ধ জড়িয়ে ভারসামঞ্জস্য থেকে সে স্থলিত হয় না। বড়ো-ওজনের সংস্কৃত ছন্দে এই আপাতপ্রতীয়মান মুক্তগতি দেখতে পাওয়া যায়। যেমন— মেঘৈর মেদুর | মম্বরং বনভূবঃ । শুামান্তম | লক্রমে । এই ছন্দ সমান ভাগ মানে না, কিন্তু সমগ্রের ওজন মেনে চলে। মুখের কথায় আমরা যখন খবর দিই তখন সেটাতে নিশ্বাসের বেগে ঢেউ খেলায় না। যেমন—

  • তার চেহারাটা মন্দ নয়।