পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ՀԵ- রবীন্দ্র-রচনাবলী থেকে প্রচলিত ৷ পয়ারের ব্যবহার প্রধানত আখ্যানে রামায়ণ-মহাভারত-মঙ্গলকাব্য প্রভৃতিতে। তিন মাত্রামুলক ছন্দ গীতিকাব্যে, যেমন বৈষ্ণব-পদাবলীতে । পূর্বেই বলেছি পয়ারের চাল পদাতিকের চাল, পা ফেলে ফেলে চলে । অভিলারযাত্রাপথে হৃদয়ের ভার পদে পদে দেয় বক্ষে ব্যথার ঝংকার । এই পা ফেলে চলার মাঝে মাঝে যতি পাওয়া যায় যথেষ্ট, ইচ্ছা করলে তাকে বাড়ানো-কমানে চলে। কিন্তু, তিন মাত্রার তালটা যেন গোল গড়নের, গড়িয়ে চলে , পরস্পরকে ঠেলে নিয়ে দৌড় দেয়। চলিতে চলিতে চরণে উছলে চলিবার ব্যাকুলতা, নূপুরে নূপুরে বাজে বনতলে মনের অধীর কথা । এইজন্তে মাত্রা যদি কোথাও তিনের মাপের একটু বেশি হয় এ ছন্দ তাকে প্রসন্নমনে জায়গা দিতে পারে না । দায়ে পড়ে এই অত্যাচার কখনো করি নি এমন কথা বলতে পারব না । প্রভু বুদ্ধ লাগি আমি ভিক্ষ মাগি, ওগো পুরবাসী, কে রয়েছ জাগি, অনাথপিণ্ডদ কহিলা অম্বুদ লিনাদে । এ কথা বোঝা শক্ত নয় যে, ‘অনাথপিগুদ’ নামটার খাতিরে নিয়ম রদ করেছিলেম । গার্ড এসে গাড়ির কামরায় বরাদ্দর বেশি মানুষকে ঠেসে ঢুকিয়ে দিয়েছে, ঘুষ খেয়ে থাকবে কিম্বা আগন্তুক ভারী দরের । সে কালে অক্ষরগনৃতি-করা তিন মাত্রামুলক ছন্দে যুক্তধ্বনি বর্জন করে চলতুম | কিন্তু, তাতে রচনায় অতিলালিত্যের দুর্বলতা এসে পৌছত । সেটা যখন আমার কাছে বিরক্তিকর হল তখন যুক্তধ্বনির শরণ নিলুম । ছন্দটা একদিন ছিল যেন নবনী দিয়ে গড়া— so বরষার রাতে জলের আঘাতে পড়িতেছে যুখী বরিয়া, পরিমলে তারি সজল পবন কঙ্কশায় উঠে ভরিয়া r