পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপতী X&O নরেশ । এমন কথা মুখে আনবেন না। আমরা সইতে পারব না । বিক্রম। মুখ আমি ! ধিক আমাকে ! অন্ধ, দেখতেই পাই নি, সিংহাসনের আড়ালে বলে কাশ্মীরের কঙ্কা চক্রান্ত করছিলেন। স্ত্রীলোককে বিশ্বাস নেই, বিশ্বাস নেই। অন্তঃপুরে ওকে কে রাখবে! কারাগার চাই ! নরেশ । এমন পাপ চিন্তা করবেন না, মহারাজ ! বিক্রম ৷ তোমরা সবাই আছ এর মধ্যে । তুমিও আছে, নিশ্চয় আছে। চলে গেছেন ! আগে তোমাদের দণ্ড দিয়ে তবে আমার অন্ত কাজ । দেবদত্ত কোথায় । কোথায় সেই বিশ্বাসঘাতক । মন্ত্রী । বৃথা চঞ্চল হবেন না, মহারাজ । মহারানী মনকে শাস্ত করতে গেছেন, নিশ্চয় আপনিই ফিরে আসবেন । অধীর হয়ে তাকে অপমান করলে চিরদিনের মতো র্তাকে আমরা হারাব । বিক্রম । ফিরে আসবেন সে কি আমি জানি নে ? অামাকে কেবল স্পধর্ণ দেখিয়ে গেলেন । মনে করেছেন তাকে কাকুতি মিনতি করে ফেরাব । ভুল মনে করেছেন । আমাকে এমনি কাপুরুষ বলেই জানেন বটে! আমার পরিচয় পান নি। নিষ্ঠুর হবার প্রচণ্ড শক্তি আমার আছে। আমাকে ভয় করতে হবে— এইবার তা বুঝবেন। দূতের প্রবেশ দূত। উত্তরপথ থেকে মহারানীর এই পত্র। বিক্রম । ( পত্র পড়তে পড়তে ) রাজকুমার নরেশ, স্বমিত্র। এসব কী লিখেছেন । এর কী মানে —“বিবাহের পূর্বে একদিন ক্ষত্ৰভৈরবকে আত্মনিবেদন করতে গিয়েছিলেম । তারই বলি ফিরিয়ে নিয়ে এসে দিলেম তোমাকে, তোমার রাজ্যকে । ব্যর্থ হল, তুমিও পেলে না, তোমার রাজ্যও পেতে বাধা পেল।” নরেশ। মহারাজ, তুমি তো জান, মহারানী আগুনে ঝাপ দিতে গিয়েছিলেন, পুরবাসীরা ফিরিয়ে এনে তোমার হাতে দিলেন। বিক্রম। সেই আগুন ৰে সঙ্গে আনলেন, দক্ষ করলেন আমাকে । এই লও নরেশ, পড়ো, আমার চোখে অক্ষরগুলি নৃত্য করছে, আমি পড়তে পারছি নে ! নরেশ । মহারানী লিখছেন, “আমি যার কাছে নিবেদিত তাকে তার অর্থ্য ফিরিয়ে দিতে চললেম । কাশ্মীরে ধ্রুবতীর্থে মার্তগুজেব জামাকে গ্রহণ করবেন । রূপ দিয়ে তোমাকে তৃপ্ত করতে পারি নি, শুভকামনা দিয়ে তোমার রাজ্যের অকল্যাণ দূর করতে পারলুম না । যদি আমার তপস্যা সার্থক হয়, যদি দেবতাকে প্রসন্ন করি