পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছড়ার ছবি আঁকাবাকা কলকলনি কক্ষণ জলের ধারায়— চাকার শব্দে অলস প্রহর ঘুমের ভারে ভারায় । ইদারাটার কাছে বেগনি ফলে তুতের শাখা রঙিন হয়ে আছে। অনেক দূরে জলের রেখা চরের কুলে কূলে, ছবির মতো নৌকো চলে পাল-তোলা মান্তলে । সাম্বা ধুলো হাওয়ায় ওড়ে, পথের কিনারায় গ্রামটি দেখা যায়। খোলার চালের কুটীরগুলি লাগাও গায়ে গায়ে মাটির প্রাচীর দিয়ে ঘেরা আমর্কাঠালের ছায়ে । গোরুর গাড়ি পড়ে আছে মহানিমের তলে, ডোবার মধ্যে পাতা-পচা পাক-জমানো জলে গভীর ঔদাস্তে অলস আছে মহিষগুলি এ ওর পিঠে আরামে ঘাড় তুলি । বিকেল-বেলায় একটুখানি কাজের অবকাশে খোলা দ্বারের পাশে দাড়িয়ে আছে পাড়ার তরুণ মেয়ে আপন-মনে অকারণে বাহির-পানে চেয়ে । অশথতলায় বলে তাকাই ধেমুচারণ মাঠে, আকাশে মন পেতে দিয়ে সমস্ত দিন কাটে। মনে হ’ত, চতুর্দিকে হিন্দি ভাষায় গাথা একটা যেন সজীব পুথি, উলটিয়ে ঘাই পাতা— কিছু বা তার ছবি-জাক কিছু বা তার লেখা, কিছু বা তার আগেই যেন ছিল কখন শেখা। ছন্দে তাহার রস পেয়েছি, জাউড়িয়ে যায় মন । সকল কথার অর্থ বোঝার লাইকেল প্রয়োজন ।