পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

こ〉b" রবীন্দ্র-রচনাবলী অধ্যাপক প্রথম পরিচ্ছেদ কলেজে আমার সহপাঠীসম্প্রদায়ের মধ্যে আমার একটু বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল। সকলেই আমাকে সকল বিষয়েই সমজদার বলিয়া মনে করিত। ইহার প্রধান কারণ, ভুল হউক আর ঠিক হউক, সকল বিষয়েই আমার একটা মতামত ছিল । অধিকাংশ লোকেই ই এবং না জোর করিয়া বলিতে পারে না, আমি সেটা খুব বলিতাম। 曹 কেবল যে আমি মতামত লইয়া ছিলাম তাহা নহে, নিজেও রচনা করিতাম ; বক্তৃতা দিতাম, কবিতা লিখিতাম, সমালোচনা করিতাম, এবং সর্বপ্রকারেই আমার সহপাঠীদের ঈর্ষা ও শ্রদ্ধার পাত্র হইয়াছিলাম। ሰ কলেজে এইরূপে শেষপর্যন্ত আপন মহিমা মহীয়ান রাখিয়া বাহির হইয়া আলিতে পারিতাম। কিন্তু ইতিমধ্যে আমার খ্যাতিস্থানের শনি এক নূতন অধ্যাপকের মূর্তি ধারণ করিয়া কলেজে উদিত হইল। আমাদের তখনকার সেই নবীন অধ্যাপকটি আজকালকার একজন স্ববিখ্যাত লোক, অতএব আমার এই জীবনবৃত্তাস্তে র্তাহার নাম গোপন করিলেও র্তাহার উজ্জল নামের বিশেষ ক্ষতি হইবে না । আমার প্রতি র্তাহার আচরণ লক্ষ করিয়া বর্তমান ইতিহাসে র্তাহাকে বামাচরণবাবু বলিয়া ডাকা যাইবে । ইহার বয়স যে আমাদের অপেক্ষা অধিক ছিল তাহা নহে ; অল্পদিন হইল এম. এ. পরীক্ষায় প্রথম হইয়া টনি সাহেবের বিশেষ প্রশংসালাভ করিয়া বাহির হইয়া আসিয়াছেন, কিন্তু লোকটি ব্রাহ্ম বলিয়া কেমন র্তাহাকে অত্যন্ত স্থার এবং স্বতন্ত্র মনে হইত, আমাদের সমকালীন সমবয়স্ক বলিয়া বোধ হইত না । আমরা নব্যহিন্দুর দল পরস্পরের মধ্যে র্তাহাকে ব্রহ্মদৈত্য বলিয়া ডাকিতাম । আমাদের একটি তর্কসভা ছিল । আমি সে সভার বিক্রমাদিত্য এবং আমিই সে-সভার নবরত্ব ছিলাম। আমরা ছত্রিশজন সভ্য ছিলাম, তন্মধ্যে পয়ত্ৰিশ জনকে গণনা হইতে বাদ দিলে কোনো ক্ষতি হইত না এবং অবশিষ্ট একজনের যোগ্যতা সম্বন্ধে আমার যেরূপ ধারণ উক্ত পয়ত্ৰিশ জনেরও সেইরূপ ধারণ ছিল । এই সভার বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে আমি কালাইলের সমালোচনা করিয়া এক ওজৰী প্রবন্ধ রচনা করিয়াছিলাম। মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তাহার অসাধারণৰে