পাতা:মুক্তি-পথে - গোপীপদ চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তি-পথে
১৩

নাই। মাত্র নীরস দেহখানা পড়ে আছে। চণ্ডীদাস বিদ্যাপতির নামে তুমি নাসিকা কুঞ্চন কর। ঐ দেখ নবীন ভারত বিদ্যাপতি চণ্ডীদাসকে সোনার সিংহাসনে বসিয়েছে। ঐ দেখ—

“নব বৃন্দাবন, নবীন তরুগণ, নব নব বিকশিত ফুল।
নবীন বসন্ত, নবীন মলয়ানিল, মাতল নব অলিকুল॥”

নীরস, শুষ্ক তুমি, এই মধুর পদাবলীর ভাবাবেগ তোমার ভাল লাগবে কেন?

এস, আমাদের এই 'কৃষ্টি-সাধন সমিতি’র সভ্য হয়ে ভারতের লুপ্ত কৃষ্টি, লুপ্ত সংস্কৃতির পুনরুদ্ধার কর।

প্রকাশ—রক্ষা কর বাবা! তোমাদের ঐ সৎকার-সমিতির সভ্য হয়ে এত তাড়াতাড়ি পটল তুলতে আমি মোটেই রাজি নই।

দিলীপ—আচ্ছা, না হয় দিন কতক পরেই হয়ো চল আজ সন্ধ্যায় চিত্রায় “চণ্ডীদাস’ দেখে আসি।

কল্যাণ—যে বাঙ্গালীকে একটি পয়সা রোজগার করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়, থিয়েটার বায়স্কোপ দেখা কি তার পক্ষে মহা পাপের কাজ না? জীবন-বীমা! বাঙ্গালীর মুক্তির যদি কোন পথ থাকে, তবে সে জীবন-বীমা। আসুন, এই লোহা-লক্কড়ের যুগে, জীবনসংগ্রামের প্রবল প্রতিযোগিতার যুগে যদি বাঁচতে চান, তবে দর্শন ছাডুন, কবিতা নদীর জলে ভাসিয়ে দিন, Cinema ঘরগুলিকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করুন।

প্রকাশ–(স্বগতঃ) দুনিয়াটা বেশ কিন্তু চলছে! (প্রকাশ্যে) ভায়া সরোজ, যদি বাঁচতে চাও তবে দালালটাকে সরিয়ে দাও। নইলে কিন্তু এখুনি নিজের কাজ হাসিল করে খাতা-পত্রে নাম সই করিয়ে নেবে। ভারি চালাক এই দালালের দল!