পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঁাশগ্নি , । ১৭১ তারি লাগি যত ফেলেছি অশ্রজল, বীণাবাদিনীর শতদলদলে করিছে সে টলমল । মোর গানে গানে পলকে পলকে ঝলসি উঠিছে ঝলকে ঝলকে, শাস্ত হাসির করুণ আলোক ভাতিছে নয়নপাতে। পুরন্দরের প্রবেশ স্বষম । (ভূমিষ্ঠ প্ৰণাম করে ) প্রভু, দুর্বল আমি। মনের গোপনে যদি পাপ থাকে ধুয়ে দাও, মুছে দাও । আসক্তি দূর হোক, জয়যুক্ত হোক তোমার বাণী । পুরন্দর। বংসে, নিজেকে নিন্দ কোরো না, অবিশ্বাস কোরো না, নাত্মানমবসাদয়েং। ভয় নেই, কোনো ভয় নেই। আজ তোমার মধ্যে সত্যের আবির্ভাব হয়েছে মাধুর্যে, কাল সেই সত্য অনাবৃত করবে আপন জগজ্জয়িনী বীরশক্তি । সুষমা। আজ সন্ধ্যায় এইখানে তোমার প্রসন্নদৃষ্টির সামনে আমার নূতন জীবন আরম্ভ হল। তোমারই পথ হোক আমার পথ । পুরন্দর। তোমাদের কাছ থেকে দূরে যাবার সময় আসন্ন হয়েছে। সুষমা। দয়া করে প্রভু, ত্যাগ কোরো না আমাকে । নিজের ভার আমি নিজে বহন করতে পারব না। তুমি চলে গেলে আমার সমস্ত শক্তি যাবে তোমারই সঙ্গে । পুরন্দর। আমি দূরে গেলেই তোমার শক্তি তোমার মধ্যে ধ্রুবপ্রতিষ্ঠিত হবে। আমি তোমার হৃদয়স্বার খুলে দিয়েছি নিজে স্থান নেব বলে নয়। যিনি আমার ব্ৰতপতি তিনি সেখানে স্থান গ্রহণ করুন। আমার দেবতা হোন তোমারই দেবতা, দুঃখকে ভয় নেই, আনন্দিত হও আত্মজয়ী আপনারই মধ্যে । একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, সোমশংকরের মহত্ব তুমি আপন অন্তরের থেকে চিনতে পেরেছ ? সুষমা। পেরেছি। পুরন্দর। সেই দুর্লভ মহত্বকে তোমার দুর্লভ সেবার স্বারা মূল্যদান করে গৌরবান্বিত করবে, তার বীর্যকে সর্বোচ্চ সার্থকতার দিকে আনন্দে উন্মুখ রাখবে, এই নারীর কাজ ; মনে রেখো, তোমার দিকে তাকিয়ে সে যেন নিজেকে শ্রদ্ধা করতে পারে— এই কথাটি ভুলো না। o g